২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

করোনা প্রাদুর্ভাবে রাঙ্গাবালী সমুদ্র সৈকত নিরব-নিস্তব্ধ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৪৮ অপরাহ্ণ, ১৫ জুন ২০২০

সাইফুল ইসলাম সায়েম, রাঙ্গাবালী:: সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় অপার সম্ভাবনার স্থান ও সৌন্দর্য লীলাভূমি সোনারচর, জাহাজমারা এবং চরতুফানিয়া। এ সময়ে লাল কাকড়ার এই সমুদ্র সৈকত এ থাকে পর্যটকদের আনাগোনার এক আনন্দ মেলা। কিন্তু বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ছে এ সমুদ্র সৈকত তিনটি, দেখা যাচ্ছে না সেই ভ্রমণ প্রিয় মানুষগুলোকে।

গত ১৮ই মার্চ থেকেই সম্ভব্য পর্যটন কেন্দ্র সোনারচর-জাহাজমারা-চরতুফানিয়া দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত এর বেলাভূমিতে নেই কোনো পর্যটকের পদচারণা, সমুদ্র সৈকত হয়ে পরেছেন পর্যটক শূন্য। বিরাজ করছে সুনশান নিরবতা ও ক্লান্তির ছাঁয়া।

নিউজ পোর্টালের সৌন্দর্যের লীলাভূমি সোনারচর : সোনারচরে সোনা নেই ঠিকই, কিন্তু আছে সোনার রঙের বালি। সূর্যের রশ্মি যখন বালির ওপর পড়ে তখন দূর থেকে মনে হয়, সত্যি সত্যিই সোনার আবির্ভাব হয়েছে এখানে। বঙ্গোপসাগরের কোলজুড়ে বেড়ে ওঠা সৌন্দর্যের লীলাভূমি সোনারচর। উত্তর-দক্ষিণ লম্বালম্বি এ দ্বীপটি দূর থেকে দেখতে ডিম্বাকার। রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে পাঁচ হাজার একরের বিশাল বনভূমি এটি। দূর থেকে সমুদ্র সৈকতের বিচে তাকালেই চোখে পরে লাল কাঁকড়ার দল। দেখলে মনে হবে যেন লাল চাদর বিছিয়ে রাখা মাঠ। অসংখ্য হরিণ আর বানর রয়েছে সোনারচরে। এছাড়া বনাঞ্চলের কাছাকাছি গেলে হয়তো সহজেই চোখ পড়বে বুনো মোষ, শুকর, মেছোবাঘসহ আরও সব বন্য প্রাণী। চোখে পড়বে দেশি-বিদেশি দুর্লভ প্রজাতির নানান রঙের পাখি। এসব সৌন্দর্য যেনো পর্যটকদের মন উজাড় করে দেয়।

রাঙ্গাবালীবাসীর সমুদ্র সৈকত জাহাজমারা : দৃষ্টি নন্দন সমুদ্র সৈকত। বালুচরে লাল কাঁকড়ার দলবেঁধে ছোটাছুটি। পাখির কলকাকলি। ঢেউয়ের গর্জন। বাতাসের তালে ঘন ম্যানগ্রোভ বনের শোঁ শোঁ শব্দ। সমুদ্রতটে চিকচিকে বালুতে পা ফেলানো আর হঠাৎ সমুদ্রের জলরাশি ঢেউ এসে ছুঁয়ে যাওয়া। সাজবেলায় পূর্বাকাশে সমুদ্রের বুক চিরে জেগে ওঠা লাল সূর্যটা। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য নিয়ে জেগে আছে এই নয়নাভিরাম জাহাজমারা সমুদ্র সৈকতটি । উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে এ দ্বীপটির অবস্থান। আর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে এটির দূরত্ব ২০ কিলোমিটার প্রায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে পর্যটকেরা এসব স্থানে আসেন কিছুটা প্রশান্তির খোঁজে।

অপরুপ সাঁজের পিকনিক স্পট চরতুফানিয়া : জাহাজমারার কাছেই আরেকটি সৌন্দর্য ঘেরা দ্বীপ চরতুফানিয়া। জাহাজমারা স্লুইসগেট কিংবা জাহাজমারা সৈকত থেকে ট্রলারযোগে তুফানিয়ার যেতে হয়। এটি পিকনিক স্পট হিসেবে বেশ পরিচিত। কারন, পর্যটক এরিয়া হিসাবে এখানে মানুষরা বেশিরভাগ সময় পিকনিক করতে আছেন। অপরুপ সাঁজের জায়গাটি সকল এর মন কেড়ে নেয় তার শান্তি হাওয়া বহমান করে। আছে সৌন্দর্যময় পরিবেশ বেড়ে উঠা মানগ্রোভ এরিয়া।

এ সময়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রভাবে চিরচেনা লাল কাকড়ার সোনারচর-জাহাজমারা-ফরতুফানিয়া এখন পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ই মার্চ পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নির্দেশে রাঙ্গাবালী সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের চলাচল নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আবাসিক হোটেল মোটেলসহ সকল বিনোদন কেন্দ্রগুলো। করোনাভাইরাস থেকে সতর্ক থাকার জন্য আগত পর্যটকদের স্ব স্ব বাড়িতে অবস্থান করার জন্য মাইকিং করেছেন বিভিন্ন পয়েন্টে। পর্যটকদের ভ্রমণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে লকডাউন তুলে দেওয়ায় কোভিড-১৯ প্রভাব এখনো খালি দেখা যাচ্ছে এই পর্যটক প্রিয় স্থানগুলো।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন