২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

গৌরনদীতে হাবা-গোবা প্রতিবন্ধী কিশোর আইসিটি মামলায় আসামি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৪৫ অপরাহ্ণ, ৩১ অক্টোবর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী:: বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের বাবা মিথ্যা সাক্ষী না দেওয়ায় হাবা-গোবা প্রতিবন্ধী ছেলেকে আইসিটি মামলায় আসামি করে হয়রানী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার গৌরনদী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন প্রতিবন্ধী কিশোরের বাবা আবু আবদুল্লাহ। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক তথ্য উদঘাটন করে প্রতিবন্ধী ছেলেকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিবন্ধী ফয়সাল আহম্মেদের বাবা আবু আবদুল্লাহ। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন- আমার ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ একজন শারীরিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী (জাতীয় পরিচয়পত্র নং-২০০২০৬১৩২৫৬১০০৯০৭-০২)। সে হাবা-গোবা, সহজ-সরল কিশোর। উপজেলার কমলাপুর গ্রামের এক নারী তাকে একটি পর্নোগ্রাফির মামলায় আসামি করেছে। প্রতিবন্ধী ছেলের বিরুদ্ধে দাযের করা মামলার বাদী এজাহারে বলেন, ফয়সাল আহম্মেদের ইমু আইডি থেকে তার অশ্লীল ভিডিও তিনটি ইমু আইডিতে ছড়ানো হয়েছে। এ অভিযোগ সত্য নয়, প্রকৃত সত্য হয়েছে আমার শারীরিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলে ফয়সালকে প্রতিবেশী নারী (মামলার বাদী) বিভিন্ন সময় তার বাড়িতে ডেকে নিত। কোন এক সময় মামলার বাদী ছেলে ফয়সাল আহম্মেদের ছবি তুলে নারী নিজের সিম দিয়ে ইমু আইডি খুলে ওই আইডি থেকে নিজেই তার অশ্লীল ভিডিও সজীব ওয়াজেদ জয়, তন্বী আক্তার ও জেসিকা শবনম নামে তিনটি ইমু আইডিতে ছড়িয়ে দেয়। ওই নারীর জমাজমি সংক্রান্ত একটি মামলায় আমাকে মিথ্যা সাক্ষী দিতে অনুরোধ জানায় আমি মিথ্যা সাক্ষী না দেয়ায় আমাকে জব্দ ও পরিবারকে হয়রানি করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার প্রতিবন্ধী ছেলেকে পর্নোগ্রাফি (আইসিটি) মামলায় আসামি করেছে।

তিনি আরও বলেন, যে মোবাইল সিম দিয়ে (০১৪০৭৫২২৭৫৯) আমার ছেলে ফয়সালের ছবি ব্যবহার করে ইমু আইডি খোলা হয়েছে ওই সিম আমার ছেলে কিংবা আমার পরিবারের কারোর নয়। আইন শৃংখলা বাহিনী ও তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত করলেই ওই সিমের মালিকের পরিচয় ও অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার সত্যিকারের দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারবে। প্রকৃত পক্ষে আমার পরিবারেক হয়রানি করতে আমার প্রতিবন্ধী ছেলেকে আসামি করা হয়েছে। ওই নারী (আইসিটি মামলার বাদী) জনৈক ফারুক হোসেনের সঙ্গে তার ইমু আইডিতে ভিডিও কলে কথা এবং অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সেইভ করে তা প্রচার করে। সচেতন সমাজের প্রশ্ন ফারুক হোসেন ও মামলার বাদী ওই নারীর ভিডিও কলের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও তাদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার তা কি করে অন্য আইডিতে গেল।

আইসিটি মামলার বাদী একজন প্রতারক ও মামলা বাজ। এলাকার মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি ও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া তার পেশা ও নেশা। ওই নারী ২০০৮ সালে কুষ্টিয়ার সুজন নামে এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রথম স্বামী থাকা অবস্থায় এক হিন্দু পরিবারের পুলিশ সদস্যর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। ২০১৬ সালে কালকিনির বিজয় মাঝি নামে এক পুলিশ সদস্যরক বিয়ে করে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় স্বামী বিজয় মাঝির কাছে কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। সেই টাকা না দেয়ায় বিজয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে। এরই মধ্যে উজিরপুরের রুহুল আমিন নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি সময়ে প্রবাসী ফারুক হোসেন নামে এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে কার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই নারী ও তার কথিত ৪র্থ স্বামীর মধ্যে ভিডিও কলের অশ্লীল ভিডিওচিত্র কিভাবে বাইরে প্রকাশ পেল? কেনই বা তা প্রকাশ করল? প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ওই নারী নিজের ভিডিও উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করেছে। সে আমার ছেলের ছবি ব্যবহার করে নিজের সিমকার্ট দিয়ে ইমু আইডি খুলে ওই আইডি থেকে তিনটি ফেইক আইডির মাধ্যমে বাইরে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়। অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধায় আমার প্রতিবন্ধী ছেলে, ভ্যান চালকসহ নিরীহ একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করেছে। প্রতিবন্ধী ছেলে ফয়সালকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- গৌরনদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য আব্দুল জলিল ফকির, খাঞ্জাপুর ইউনিযন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হানিফ হাওলাদার, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জাহাঙ্গীর ঘরামী, খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য বাদীর মামা হাফিজুর রহমান হাবুল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর ফকির, পশ্চিম খাঞ্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রিয়াজ হোসেন, ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুল হক তালুকদার, যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম ।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন