২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

ঝালকাঠির মগড়ের সেই মূর্তিমান সন্ত্রাস শাহীনও আ’লীগে অনুপ্রবেশকারী!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:২২ অপরাহ্ণ, ০২ নভেম্বর ২০১৯

বিশেষ প্রতিনিধি:: আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকায় ঝালকাঠির নলছিটির কুখ্যাত মাদক সম্রাট মগড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিন’র নাম উঠে এসেছে। তালিকায় দেখা যায়, এই মাদক সম্রাট এক সময়ে জাতীয় পার্টির মগড় ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন। যদিও এর আগে জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্রসমাজ করতেন সুযোগ সন্ধানী এই ব্যক্তি। নিজের অন্তহীন অপকর্ম থেকে রক্ষায় আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে বর্তমানে মগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে বহাল রয়েছেন। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের অনুঘটক কুখ্যাত মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহিন এর বিরুদ্ধে তালিকায় বিচরাধীন একটি মামলা দেখা যায়, যার জিআর ২০১/১১ (নল:)।

আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড নেতা এনামুল হক শাহিনের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ তবুও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে! অপরাধের শেষ নেই তার, কিন্তু এই টিকির নাগাল এখনো ধরতে পারেনি কেউ। নজিরবিহীন অনিয়ম। অনেক আগেই কুখ্যাত মাদক সম্রাট বনে গিয়ে অপরাধের স্বর্গ রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তিনি হলেন বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলার নলছিটির মগড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক বাণিজ্য, যৌন হয়রানীকারী ও যৌন হয়রানীকারীদের শেল্টারদাতা,অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের অনুঘটক কুখ্যাত মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীন। তিনিই ঝালকাঠির জেলার নলছিটি উপজেলার সর্বেসর্বা। নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের তিনি যেনো রাজাও। মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীনের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্তহীন অভিযোগ থাকলেও নিরবে গুমড়ে গুমড়ে কাঁদছে অসহায়, নিপীড়িত, নির্যাতিত, হয়রানীর শিকার ভুক্তভোগীদের। কারণ প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকেই অন্যায় অপকর্মের ফিরিস্তি রচনা করে চলছেন তিনি। কেন তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে-এ প্রশ্নের স্পষ্ট কোনো উত্তর মিলছে না। অভিযোগ আছে, এরকম অপরাধী চক্রের সঙ্গে খোদ স্থানীয় থানা পুলিশ জড়িত। এ বিষয়ে অতীতে অনেকবার অভিযোগ উত্থাপিত হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। অভিজ্ঞমহল বলছেন-একজন অপরাধী যে-ই হোক না কেন, তার দ্বারা সমাজ কলুষিত হয়,রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজেই অপরাধীর যথাযথ শাস্তি হওয়া উচিত।

কুখ্যাত মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় (প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায়) অসংখ্যবার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিতও হয়। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জো নেই, প্রতিবাদ করলে কারো রেহাই নেই। এ কারণে ভুক্তভোগীরা নিরবে গুমড়ে গুমড়ে কাঁদছে। বিচারের বাণী নিরবে নিবৃত্তে কাঁদে। আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলে আসলেও এ যেনো দেখার কেউ নেই। জনমনের প্রশ্ন – তবে কী এরকম একজন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট হিসেবে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে আখ্যায়িত এই এনামুল হক শাহীন ও তার সহযোগীদের জিম্মিদশায়-ই থাকবে অসহায়,নীরিহ, নিপীড়িত, ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ ? এই সন্ত্রাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার কী কোন উপায় নেই, নেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা ? তবুও সাধারন মানুষের আস্তা রয়েছে যে- সুযোগ সন্ধানী আওয়ামী লীগে মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীন ও তার অস্ত্রধারী বাহিনীর জিম্মিদশা থেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হস্থক্ষেপে মুক্তি মিলবে। এরকমই প্রত্যাশা জনমনের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে-ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার মগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এই শাহীন আরো আগেই এলাকায় গড়ে তুলেছে সংঘবদ্ধ এক ভয়ঙ্কর অপরাধী চক্র। চেয়ারম্যান শাহীন এর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাঁর ভয়ে তটস্থ এলাকার সাধারণ মানুষ। এরফলে এলাকার শান্তিপ্রয় নারী পুরুষ অতিষ্ঠ, তার অস্ত্রধারী বাহিনীর ভয়ে সাধারন জনগণ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। মাদক বাণিজ্য, অস্ত্র ব্যবসা, ভাড়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, কিলিং মিশনসহ অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে মাদক সম্রাট শাহীনের বিরুদ্ধে।

এমনকি যৌণ নিপীড়নকারীও এই শাহীন। এবং তার সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। স্কুল-কলেজগামী মেয়েদের টার্গেট করে যৌণ হয়রানী করার অভিযোগও রয়েছে মাদক সম্রাট শাহীনের বিরুদ্ধে। যৌণ হয়রানীকারীদের অন্যতম শেল্টারদাতাও অস্ত্র ব্যবসায়ী এনামুল হক শাহীন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিলসহ গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন তিনি। অসংখ্য অপকর্মের হোতা এনামুল হক শাহীন বেপরোয়া হয়ে পুরো মগড়সহ আশপাশ এলাকায় মাদক,অস্ত্র ব্যবসাসহ ভাড়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মরিয়া হয়ে উঠে। সচেতন মহল বলছেন- যেখানে সরকার মাদক,যৌণ হয়রানী,অস্ত্র ব্যবসায়ী,সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে অবস্থান করছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করে মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি যৌণ নিপীড়নকারী বা যৌণহয়রানীকারীদের বিরুদ্ধেও সরকার জিরো টলারেন্স। এরপরও একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, যিনি মাদক সম্রাট হিসেবে বহুল পরিচিত। মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীন, তার ভাই আরেক ইয়াবা ব্যবসায়ী সবুজ হাওলাদারের বিরুদ্ধেও অসংখ্যবার বিভিন্ন পত্রিকায় মিডিয়ার শিরোনামও বনে গেছেন। তবুও কোন এমন অদৃশ্য শক্তিতে মাদক সম্রাট শাহীন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বহাল তবিয়তে থেকে অপরাধের স্বর্গ রাজ্যে টিকিয়ে রাখছেন। জনশ্র“তি রয়েছে-স্থানীয় থানা পুলিশের কয়েক অসাধু পুলিশ সদস্যদের সাথে গোপন বুনিবনায় গভীর সখ্যতায় মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীন তার অপরাধ সাম্রাজ্যের পরিধি বেড়েই চলছে। এ যেনো আরেক এরশাদ শিকদার।

অভিজ্ঞমহলের ভাষ্য- বর্তমান সরকার যেখানে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, যৌণহয়রানীকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে, এরকম পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের অসাধু পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে গোপন লেনদেনের বুনিবনায় একজন ভয়ঙ্কর অপরাধী কিভাবে কোন শক্তির শেল্টারে অপরাধের ফিরিস্তি রচনা করে চলছেন। মাদক সম্রাট ও মগড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভাই ও আমি দুজনই ষড়যন্ত্রের শিকার। সমাজে আমাদের হেয় করার জন্য একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। আমি ও আমার ভাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই।’ বরিশাল সরকারী মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানী ও হুমকী প্রসঙ্গে বলেন- একটি বিষয়ে ওই কলেজ ছাত্রীর পিতার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাকে ফোনে ধরিয়ে না দিয়ে কলেজছাত্রী ফোন ধরলে আমার মাথাটা গরম হয়ে যায়। এ কারণে কিছুটা কলেজ ছাত্রীকে বকাবকি করেছি। নোংরা ভাষায় গালাগাল এবং কলেজ ছাত্রীকে দেখিয়ে দেয়ার হুমকী প্রসঙ্গে বলেন-তখন মাথাটা অনেক গরম ছিলো।

দাম্ভিকতার সুরে বলেন-আমি এলাকার চেয়ারম্যান,আমি যা বলবো তাই হবে। এদিকে কলেজ ছাত্রী দুই বোনকে মগড় ইউনিয়নের ডুবিল গ্রামের মুনসুর আলী হাওলাদারের বখাটে পুত্র সবুজ কর্তৃক যৌনহয়রানী করায় নলছিটি থানায় একটি জিডি করা হয়। যার জিডি নং- ৭৯৪, তারিখ : ২১/০৭/২০১৯। বখাটের পক্ষাবলম্বন করে সেই জিডি তুলে নেয়ার জন্য বার বার কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন কায়দায় চাপ প্রয়োগ করে আসছে চেয়ারম্যান শাহীন ও অপরাধী চক্র। পাশাপাশি এলাকার কয়েক মোড়ল।

এক্ষেত্রে স্থানীয় থানা প্রশাসনের ভূমিকা চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। চেয়ারম্যানের কথামতো জিডি না উঠানোর ফলে ২৮ জুলাই দুপুর ১২ টা ৮ মিনিটে ক্ষিপ্ত হয়ে কলেজ ছাত্রীর সেল ফোনে চরম অসভ্য,বর্বর ভাষায় গালাগাল করে দেখিয়ে দেয়ার হুমকী প্রদান করেন। নলছিটির কুখ্যাত মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীন, যৌনহয়রানীকারী বখাটে সবুজ এবং শাহীনের সাঙ্গপাঙ্গদের লাগাম টেনে ধরতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের দৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা,যারা অপরাধী চক্রের ভয়ে মুখ খুলতেও পারছে না। দক্ষিণাঞ্চলের কুখ্যাত মাদক সম্রাট এনামুল হক শাহীন এর বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়,আইজিপি, র‌্যাব’র মহাপরিচালকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কুখ্যাত মাদক সম্রাট ইফটিজারদের শেল্টারদাতা এনামুল হক শাহীন এর অপকর্মের বিষয়ে হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী,সচেতন ও অভিজ্ঞমহল।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন