২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

তরুণীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:০৩ অপরাহ্ণ, ২৫ জানুয়ারি ২০২২

তরুণীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> মুন্সিগঞ্জে এক নারীকে (৩৬) উত্ত্যক্তের অভিযোগে শহর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিফাত সরকারকে (২৪) কুপিয়ে জখম করেছেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় ওই ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে থাকা ৮ থেকে ১০ জন কর্মী গণপিটুনির শিকার হন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আধারা ইউনিয়নের বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, পূর্বশত্রুতার জেরে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। ঘটনা আড়াল করতে ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে। মারধরের ঘটনায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মুন্সিগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিফাত সরকার (২৪), তার সহযোগী মো. রিফাত (২৩), মো. শাওন শেখ (২৪), নাঈম হাসান (২৪) ও মো. মুন্নার (২৫) নাম জানা গেছে। তাঁদের মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শহর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিফাত সরকার ও তার সহযোগী ১২-১৪ জন সাতটি মোটরসাইকেলে করে বাংলাবাজার থেকে আসছিলেন। এ সময় এক নারীকে তাঁরা অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন। একপর্যায়ে ওই নারীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিরা এবং ওই নারীর পক্ষের লোকজন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মারধর করেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা সিফাত ছুরিকাহত হন।

ওই নারীর স্বামী একজন প্রবাসী। তাঁরা রাজধানীর হাতিরপুল এলাকায় বসবাস করেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার একটি গ্রামে। ওই নারীর দাবি, সোমবার তাঁরা ঢাকা থেকে চিতলিয়া বাজারের দিকে ঘুরতে যাচ্ছিলেন। তাঁর গাড়িতে স্বামী, জা ও দেবর ছিলেন। গাড়িটি হোগলাকান্দি থেকে বকুলতলার দিকে কিছু দূর এগোলে ১০ থেকে ১৫ জন তাদের গতি রোধ করেন। এ সময় তাঁরা তাঁকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করেন ওই নারীর স্বামী। পরে বকুলতলায় স্কুলের সামনে আবারও গতি রোধ করেন মোটরসাইকেলে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ওই নারী বলেন, গাড়ি থেকে নামিয়ে তাকে ধর্ষণের উদ্দেশে স্কুলের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। তাঁর স্বামী বাধা দিলে সিফাতরা তাঁকে মারধর করেন। পরে তাঁদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। সে সময় ছাত্রলীগের ওই ছেলেদের মারধর করে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁরা থানায় যান। তবে পুলিশ তখন কোনো অভিযোগ নেয়নি।

উত্ত্যক্তা, মারধর ও ধর্ষণচেষ্টার সব অভিযোগ অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা সিফাত সরকার। তিনি বলেন, ‘আমরা ওই নারীকে চিনি না। আমরা মুন্সিগঞ্জ পৌর মেয়রের সঙ্গে রাজনীতি করি। এ কারণে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে আমাকে আহত করে। আমার সঙ্গে থাকা ছেলেদের প্রচণ্ড পেটায়। মারধরের ঘটনা ঢাকতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বক্কর সিদ্দিক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, মারধরের ঘটনায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সিফাত বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। ভুক্তভোগী নারী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, সেটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন