২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

প্রেমিক যুগলদের নৌকায় ঘুরিয়ে সংসার চলে ১২ মাঝির

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:১৩ অপরাহ্ণ, ১৬ জানুয়ারি ২০২২

প্রেমিক যুগলদের নৌকায় ঘুরিয়ে সংসার চলে ১২ মাঝির

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> বরিশাল নগরীর সুপরিচিত ডেটিং স্পট ত্রিশ গোডাউন বধ্যভূমি সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর পাড়। দুপুরে এখানে যারা আসে তাদের বেশির ভাগই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া স্টুডেন্ট। প্রেমিক যুগলেরা নির্জনে সময় কাটানোর জন্য বেছে নেয় নৌকা। জোড়া বেঁধে নদীর বুকে ঘুরে বেড়ায় তারা। নৌকায় প্রেমিক যুগলের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। বিকেলে সবাই আসে, মুক্ত বাতাসের খোঁজে।

নৌকা ভ্রমণ বেশ জমজমাট এখানে। নৌকা ভাড়া নেয়া হয় ঘন্টা হিসাব করে। ভাড়ার পরিমাণ প্রতি ঘন্টায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

প্রেমিক জুটি থাকলে বেড়ে যায় এই নৌকার ভাড়া। তখন ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকাও নেয়া হয় ভাড়া। নৌকায় করে দুপুর  থেকে প্রায়ই সন্ধ্যা এমনকি রাত পর্যন্ত ঘুরতে থাকেন প্রেমিক যুগলেরা। এসব নৌকায় বিভিন্ন সময় নাচ-গানেরের আসর জমে।

আর এই প্রেমিক যুগলদের নৌকায় ঘুরিয়ে থাকেন ডজনখানেক মাঝি। অনেক মাঝির স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছে কীর্তনখোলা নদী পাড়ের ত্রিশ গোডাউন। নৌকা বেয়ে যা আয় করেন তা দিয়ে ভালোভাবেই তাদের সংসার চলে যায়।

এখানকার মাঝিরা জানায়, আগে তারা চরকাউয়া খেয়া ঘাটে যাত্রী পারাপার করতেন। তবে যাত্রী পারাপার থেকে বেশি আয় হয় না। এখানে বেড়াতে আসা লোকজন ঘণ্টা চুক্তিতে নদী ঘোরে। এতে ভালো পয়সা পাওয়া যায়।

তারা আরও জানান, প্রতিদিন নৌকা বেয়ে ৮শ’ হাজার থেকে ১ হাজার টাকা আয় করেন। উৎসবের দিনে আয় ২ হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যায়।

আনসার উদ্দিন নামে এক মাঝি জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে নৌকা বাইতে গিয়ে কত প্রেমিক যুগলের প্রেমের গল্প শুনেছি। নানান মানুষের প্রেম বিরহের সাক্ষী আমি, আমার নৌকা আর এই কীর্তনখোলা নদী। অনেক বছর পরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আবারও এসেছে তাদের অনেকে, বখসিশ দিয়েছে, নতুন জীবনের গল্প শুনিয়েছে। একা এসেছেন অনেকে, স্মৃতি বিজড়িত স্থান ঘুরে সামান্য প্রশান্তি পেতে, শুনিয়েছেন কষ্টের কথা।

তিনি আরও জানান, বহু প্রেমিক জুটির সুখ-দুঃখের সাক্ষী আমি। এই নদী থেকে আমি অনেক কিছুই পেয়েছি। নদী আমাকে অর্থ, সম্মান ও ইজ্জত দিয়েছে। তাই ৬৫ বছর বয়সেও নৌকা বাইছি।

13 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন