২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

ফেসবুক লাইভে সার্টিফিকেট পোড়ালেন ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬:১৩ অপরাহ্ণ, ৩১ মে ২০২৩

ফেসবুক লাইভে সার্টিফিকেট পোড়ালেন ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: নেত্রকোনায় ফেসবুক লাইভে এবার নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেছেন ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুস সালাম। সরকারি চাকরির জন্য অসংখ্য আবেদন করেও চাকরি পাননি তিনি। এদিকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সও শেষ। তাই তাঁর সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌরশহরে একটি রেস্টুরেন্টের ভেতর সালাম তাঁর সার্টিফিকেটগুলো আগুনে পোড়ান। পরে সেই সার্টিফিকেট পোড়ানো ছবি ও ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন। মুহূর্তেই তাঁর পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে সরকারি ইডেন কলেজের এক ছাত্রী তাঁর সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলার পর সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে তাঁর চাকরি মেলে। সার্টিফিকেট পোড়ানো আব্দুস সালাম মোহনগঞ্জ পৌরশহরের দেওথান গ্রামের শামছুর রহমানের ছেলে। শহরের স্টেশন রোডে ‘কুটুম বাড়ি’ নামে তার একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। চাকরি না পেয়ে তিনি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেন।

ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র আব্দুস সালামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৬ সালে মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৮ সালে ময়মনসিংহের আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। পরে ঢাকা কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন সালাম।

পড়াশোনা শেষে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির জন্য একাধিক আবেদন করেও চাকরি মেলেনি। চাকরির বয়স শেষে হতাশ হয়ে নিজের শহরে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেন।ক্ষোভ প্রকাশ করে সালাম বলেন, ‘স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছি। রেজাল্টও ভালো। কিন্তু অসংখ্য আবেদন করেও চাকরি হয়নি। অথচ অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরাও লবিং-ঘুষ এর মাধ্যমে চাকরি পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমার বয়স ৩৬ বছর। সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরিতেই আর আবেদনের সময় নেই। অকেজো এই সার্টিফিকেট তাই পুড়িয়ে দিলাম। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি জানাই। আওয়ামী পরিবারের সন্তান হয়ে শুরু থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। গ্রুপিং রাজনীতি চাকরি পাওয়ার জন্য ক্ষতিকর হয়েছে।’

বয়সসীমা সবার জন্য না বাড়িয়ে সার্টিফিকেট পোড়ানোর কারণে ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তাকে চাকরি দেওয়া ঠিক হয়নি উল্লেখ করে সালাম বলেন, ‘এটা মন্ত্রী মহোদয় ঠিক করেননি।একজনের জন্য আলাদা নিয়ম হতে পারে না। সবার জন্য চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো দরকার। তাহলে সবাই এই সুযোগটা পাবে।’

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘এভাবে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা ঠিক নয়। পড়াশোনা আসলে চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, জ্ঞান অর্জনের জন্য।এ জ্ঞান জীবনের সবক্ষেত্রেই কাজে লাগবে। সবার তো চাকরি হয় না। তাই চাকরির চেষ্টার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। তাহলে এই হতাশাগুলো আর থাকবে না।’

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন