২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরগুনায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে ‘আলোর দিশারী’

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩:১২ অপরাহ্ণ, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

বরগুনায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে ‘আলোর দিশারী’

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরগুনায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আলোর পথ দেখানোর জন্য কাজ করেছে ব্যতিক্রমধর্মী স্কুল ‘আলোর দিশারী’। মানবিক বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের হাত ধরে চলছে এ স্কুলটি। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে দুই ঘণ্টা ব্যাপী চলমান এ স্কুলটিতে সপ্তাহে ছয়দিনের ক্লাসে ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ জন শিশু রয়েছে।

বরগুনা পৌর শহরের ডিকেপি সড়কের পাশে আলোর দিশারী স্কুলটি ঘুরে জানা যায়, মানবিক বাংলাদেশ নামক সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীদের চিন্তায় বাংলাদেশ বিমানে কর্মরত সাইফুর রহমানের পরামর্শে ২০২২ সালে নিজেদের উদ্যোগে এ স্কুলটি তৈরি করেন।

তাদের মধ্যে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, স্কুলের শিক্ষক ও কলেজের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন। শুরুটা মাত্র সাতজন স্বেচ্ছাসেবীর হাত ধরে হলেও এখন এলাকার অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছেন স্কুলটিতে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ্যবইসহ কলম, খাতা ও প্রতিদিন নাস্তা দেয় সংগঠনটি। বরগুনার ডিকেপি সড়কে ইমাজিং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের একটি কক্ষে সন্ধ্যার পরে স্কুলটির ক্লাস শুরু হয়।

এলাকাবাসীরা বলেন, এখানে যারা কাজ করছেন তারা সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে স্কুলটিতে সময় দিচ্ছেন এবং ফ্রি শেখাচ্ছেন। তাদের কারণে এলাকার অনেক সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা অন্তত অক্ষর জ্ঞান পাচ্ছেন। এধরনের কাজে আমরাও তাদের পাশে থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করি।

আলোর দিশারী শিক্ষার্থী জুঁই বলে, আমার বাবা সাইকেল মেরামতের কাজ করেন, মা ছোট একটি দোকান চালান। সকাল হলেই তারা কাজে চলে যায়। আমি বাসায় থাকি, স্কুলের সময়ে স্কুলে যেতে পারি না। তাই সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টা এই ফ্রি স্কুলে আসি।

আরেক শিক্ষার্থী সালমান বলেন, আমার বাবা মানুষের বাসায় ভ্যানে করে ফিল্টারের পানি দেয়। বাবাকে বলে স্কুলের স্যার আমাকে এখানে ভর্তি করেছে। এ বিষয়ে স্কুলটির স্বেচ্ছাসেবক ফয়জুল মালেক সজিব বলেন, আমরা এলাকায় ঘুরে সুবিধাবঞ্চিত যারা রয়েছে তাদের খুঁজে বের করে লেখাপড়ায় আগ্রহী করি।

যাদের স্কুলে যাওয়ার মতো সুযোগ আছে কিন্তু স্কুলে যায় না তাদের স্কুলে পাঠানোর চেষ্টা করি। তাছাড়া যারা স্কুল ছেড়ে দিয়েছে স্কুলে যাওয়ার বয়স নেই তাদের বুঝিয়ে আমাদের স্কুলে ভর্তি করি।

স্কুলটির আরেক স্বেচ্ছাসেবক নাজমুল কবির লিমন বলেন, আমি বরগুনা খাজুরতলা মডেল কলেজে শিক্ষকতার পাশাপশি এখানে সময় দেই। আমার মতো এখানে যারা সুবিধা বঞ্চিতদের শিক্ষা দিচ্ছেন তারা সবাই স্বেচ্ছায় এ কাজ করছেন। আমরা সবাই নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেক মাসে নিজেদের চাঁদার টাকায় আলোর দিশারী স্কুলটি চালাচ্ছি।

বাংলাদেশ বিমানে কর্মরত সাইফুর রহমান বলেন, আলোর দিশারী স্কুলে কেউ এসে সুবিধাবঞ্চিত ছিন্নমূল শিশুদের বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষকতা করতে পারবেন।আমরা এই স্কুলের মাধ্যমে বরগুনায় সুবিধা বঞ্চিত ছিন্নমূল শিশুদের প্রাক-প্রাইমারি স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করি।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন