২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরগুনায় বিলাসী পীরের সন্ধান, করেন জমি দখল!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:০১ অপরাহ্ণ, ০২ নভেম্বর ২০১৯

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন:: এলাকায় পীর হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ। নাম শাহ মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে অর্থ আত্মসাৎ ও সম্পত্তি দখলের। পীরের মুরীদ ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দরবারের মসজিদের উন্নয়ন না করে অবৈধ পন্থায় তিনি গড়ে তুলছেন বিলাসবহুল বাড়ি। ঘটনাটি বরগুনার বেতাগীর মোকামিয়া দরবারের। এখানের পীর হলেন মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস।

এলাকাবাসী জানায়, মোকামিয়ার মরহুম পীর হাসান উদ্দিন মাদরাসা, মসজিদ ও দরবার প্রতিষ্ঠা করেন। তার রয়েছে হাজার হাজার মুরীদ। সেই সময়কার মুরিদগণ দরবারের উন্নয়নের জন্য একরে একরে জমি দান করেন। এছাড়া মাদ্রাসা ও দরবারের নামে দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের সর্বত্র রয়েছে হাজার হাজার দান বাক্স। এতে বছরে কোটি টাকার উপরে আয় হয়। ওই টাকায় দরবার ও মাদ্রাসার উন্নয়নে ব্যয় করার কথা থাকলেও অধিকাংশ টাকাই ভোগ করেন বর্তমান পীর ও মোকামিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস। তার বাড়ি উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের মাদ্রাসা সংলগ্ন বাজারে। তার বাবা মোকামিয়া দরবারের খাদেম আবদুল আজিজ ছিলেন তৎকালীন পীর হাসান উদ্দিনের বাড়ির পাশের চাচাতো ভাইয়ের নাতি সম্পর্কে।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১৭ সালের মে মাসে ঢাকার গুলশানে আড়াই কোটি টাকা দামের একটি ফ্লাট ক্রয় করেন মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস। এছাড়া বরিশাল, বরগুনার পাথরঘাটা, তালতলীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মুরিদদের দান করা জমি নিজের বলে দাবি করে ভোগ করে আসছেন। এতে মুসুল্লিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, দরবারের নামে অর্থ ও সম্পত্তি ভোগ করলেও মসজিদ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মসজিদের উন্নয়নে কোন নজর নেই তার।

মুরিদরা অভিযোগ করে বলেন, দরবারের কোন খাদেম কিংবা কর্মরত অন্য কেউ তার মতের বিরোধিতা করলেই তাদের উপর নির্যাতন করা হয়। বেত দিয়ে পেটানোরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত ৪ অক্টোবর দরবারের ইয়াতিম খানার বাবুর্চি আব্দুল করিমকে দানকৃত ছাগল পীরকে না দেওয়ায় তাকে বেত দিয়ে মারধর করেন এমন অভিযোগ রয়েছে। যার বিচার চেয়ে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্যের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়।

ইতোমধ্যে সংসদ সদস্য শওকত হাছানুর রহমান রিমন এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘কোন পীরের এমন জঘন্য কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা কখনোই আশা করা যায় না। সকলের সহযোগিতায় দরবার ও মাদ্রাসাটিকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে।’

নাম না বলার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস মাঝে মধ্যে ঢাকা থেকে কিছু অপরিচিত লোকদের তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর তাদের নিয়ে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটাসহ বিভিন্নস্থানে আনন্দ ভ্রমণে নিয়ে যান। ঘোড়ায় চরে মনোরঞ্জন করেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়।

মোকামিয়ার দরবার শরীফের পীর অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস এসব অভিযোগ অস্বীকার বলেন, ‘ব্যক্তিগত উপার্জিত অর্থ দিয়ে আমি বাড়ি নির্মাণ করেছি। দরবারের দান করা জমি ও অর্থের সঙ্গে এর কোন সম্পৃক্ততা নেই।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন