২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরগুনায় স্বাক্ষর জাল করে ২ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ, ০৫ জানুয়ারি ২০২০

বার্তা প্রতিবেদক, বরগুনা:: বরগুনা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দুই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থী-শিক্ষকদের স্বাক্ষর জাল ও ভুয়া বিল ভাউচার করে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন- মো. আরিফুজ্জামান ও মো. মনির হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে জুন মাসে সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণে পিইডিপি-৪ থেকে বরাদ্দ করা টাকার ৩ লাখ ৪২ হাজার ৯০০ টাকা ৮০১ জন প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকের খাবার ভাতাসহ উপকরণ, প্রশিক্ষকদের সম্মানি ও আনুষঙ্গিক ব্যয় দেখিয়ে ওই দুই কর্মকর্তা জ্বালিয়াতি করে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাৎ করেন।

নির্ধারিত সময়ে প্রশিক্ষণ করার কথা থাকলেও প্রশিক্ষণ না দিয়ে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের কাছ থেকে বিল ভাউচারে আগাম স্বাক্ষর নেন। অনেক প্রশিক্ষণার্থী যারা স্বাক্ষর করেননি তাদের স্বাক্ষর জাল করে বিল ভাউচারে ২৮০ টাকা প্রাপ্তি দেখিয়েছেন ওই দুই কর্মকর্তা।

চাহিদাভিত্তিক সাব-ক্লাস্টার বাজেট বিভাজনে রয়েছে, প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের খাবার ভাতা ২৮০ এবং প্রশিক্ষণ উপকরণে ৬০ টাকাসহ মোট ৩৪০ টাকা করে প্রতি প্রশিক্ষণার্থীর জন্য বরাদ্দ ছিল। তবে বিল ভাউচারে ২৮০ টাকা দেখিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের দেয়া হয়েছে ২০০ টাকা।

প্রশিক্ষণার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি অথচ প্রশিক্ষণ বাবদ ২০০ টাকা দেয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেন, প্রশিক্ষণ হয়নি আর টাকাও পাননি। অথচ প্রশিক্ষণ তালিকায় তাদের নাম দেখা যায়।

জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয় সূত্রে সাব-ক্লাস্টার বিল ভাউচারে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান ও মনির হোসেনের দুই ক্লাস্টারেই নিমতলি মাইঠা ও পূর্ব চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে সলিমুল্লাহর ২৮০ টাকা প্রাপ্তির স্বাক্ষর রয়েছে। তবে এই দুই স্বাক্ষরের মধ্যে কোনো মিল নেই।

এ ব্যাপারে শিক্ষক সলিমুল্লাহ ও নিমতলী মাইঠা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আলম বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেননি বলে অভিযোগ করেন। বিল ভাউচার রেজিস্টারেও তাদের স্বাক্ষরে মিল নেই।

পশ্চিম ডেমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বলেন, আমরা সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ দিইনি আর টাকাও পাইনি। বিল ভাউচারে যে স্বাক্ষর রয়েছে ওই স্বাক্ষর আমাদের নয়।

বিল ভাউচারের ওই একই শিটে ২৬ প্রশিক্ষণার্থীর স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ কত টাকা তাদের দেয়া হয়েছে টাকার অঙ্ক সেখানে লেখা নেই।

এছাড়া আরিফুজ্জামানের জমা করা বিল ভাউচারের ক্যাশ মেমোতে দেখা যায়, ক্রেতা বিক্রেতার স্বাক্ষর নেই। কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রশিক্ষণের উপকরণ ক্রয় করা হয়েছে তার কোনো নাম নেই। শুধু মাত্র দেখা যায় ন্যাশনাল লাইব্রেরি এন্ড স্টেশনারি, বাজার রোড, বরগুনার কয়েকটি প্যাড কাগজ। ওই প্যাডে ক্রেতা-বিক্রেতার কোনো স্বাক্ষর নেই।

এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান ও মনির হোসেন বলেন, সব নিয়ম মেনেই সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরিফুজ্জামান বলেন, অনিয়ম হয়েছে কিনা সেটি বিল ভাউচার ও ক্যাশ মেমো দেখে বলতে পারব।

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন জানান, সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণের সময় আমি এখানে কর্মরত ছিলাম না। যাই হোক বিষয়টি যখন শুনেছি, তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন