২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশাল জেলা পরিষদ/ বদলি নিয়ে দ্বন্দ্ব: প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৪০ পূর্বাহ্ণ, ২১ মার্চ ২০২৩

বরিশাল জেলা পরিষদ/ বদলি নিয়ে দ্বন্দ্ব: প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম মহিউদ্দিন মাহিনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীকে বদলি করা নিয়ে বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর এবং তার ছেলে আতিকুর রহমানের সাথে সোমবার দুপুরে বাগ-বিতণ্ডা হয় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার। একপর্যায়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও তার ছেলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। তথ্যসূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ।

জেলা পরিষদের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী দাবি করেছেন পূর্বে বেশকিছু বিষয় নিয়ে চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ছিল। সোমবার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মামুন শিকদারকে বদলি করা নিয়ে ওই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নেয়। এর জেরেই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। তবে লাঞ্ছিতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর। তার দাবি দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে।

বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, রোববার ডাক বাংলোর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মামুন শিকদারকে জেলা পরিষদের বদলি করে এনেছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। সোমবার অফিসে এসেই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর এক আদেশে মামুন শিকদারকে আগৈলঝাড়া ডাকবাংলাতে বদলি করেন। সালাম বলেন, এ নিয়ে চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। তখন চেয়ারম্যানের পুত্র আতিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তিনি মাঝেমধ্যেই অফিসে আসেন। সালাম দাবি করেন, চেয়ারম্যান আইনগতভাবে বদলি করতে পারেন না, এ বিষয়টি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে বুঝিয়েছেন। তবে তিনি সে বিষয়টি না মেনে তার নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চাপ প্রয়োগ করেন। এ নিয়েই বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।

বরিশাল জেলা পরিষদের গাড়িচালক গিয়াস উদ্দিন সিকদার বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সোমবার দুপুরে অফিসের মধ্যে বসেই ঝামেলা হয়েছে। আর এর কারণ ডাকবাংলোতে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মামুন শিকদার। কারণ মামুন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ইসমাইল হোসেনের সাথে বেয়াদবি করেছে। ইসমাইল হোসেনের নির্দেশনা না মানায় ইসমাইল মামুনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। আর মামুন এর প্রতিবাদ করায় তাকে বদলি করে দেন চেয়ারম্যান।

তবে নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বে বরিশাল জেলা পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য জানান, কয়েকদিন পূর্বে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীরের পুত্রের বিবাহ হয়। ওই বিবাহ অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ থেকে ৩ লক্ষ টাকা নেন চেয়ারম্যান। উন্নয়ন ফান্ডের টাকা নিয়ে সেই টাকা দিতে স্বীকৃতি জানিয়েছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। সেই থেকেই তার সাথে দ্বন্দ্বের শুরু। এরপরে জেলা পরিষদে অস্থায়ী ভিত্তিতে তিনজন কর্মচারী নিয়োগের ফাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন চেয়ারম্যান। এতেও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অস্বীকৃতি জানান। জেলা পরিষদের বেদখল হওয়া বেশকিছু জমি ও মার্কেট উদ্ধার করতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিলে তাতেও বাধা দেন চেয়ারম্যান। আর এইসব বিষয় নিয়েই দুজনের মধ্যে বিরোধ চরমাকারে ধারণ করে।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম মহিউদ্দিন কবির মাহিন সাংবাদিকদের বলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কর্মচারীদের বদলি করার নির্দেশনা দিতে পারেন। কিন্তু রোববার যে কর্মচারীকে ডাকবাংলা থেকে অফিস কার্যালয় আনা হয়েছে সোমবার চেয়ারম্যান সেই কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করবেন এটা আইনত সিক্ত নয়। আমি এই বিষয়টির প্রতিবাদ করেছি। এটা চেয়ারম্যান ভালোভাবে নেননি, বরং তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।

তবে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, নিজেদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, পরক্ষণে আমরা তা মিটমাট করে নিয়েছি।’

20 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন