২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:০৮ পূর্বাহ্ণ, ৩১ মে ২০১৯

গত কয়েক বছরের মতো আসন্ন ঈদেও সড়কপথে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের বাড়ি ফেরা খুব একটা সুখকর হবে না। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ছয় লেনে উন্নয়নের কাজ চলায় বিড়ম্বনায় পড়তে হবে যাত্রীদের।

অন্যদিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দীর্ঘ অংশে পাশের এজিনের মাটি সরে যাওয়ায় রয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। দুটি মহাসড়কের ওপরই রয়েছে বেশ কয়েকটি হাটবাজার। এর ওপর ঈদ কেন্দ্র করে কয়েকগুণ বেড়েছে অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য।

এসব কারণে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঈদযাত্রা এবারও স্বস্তির হবে না বলেই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরেজমিন ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঢাকার বাবুবাজার থেকে মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার মহাসড়ক দুই লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে।

মহাসড়কের কাজে বিপুলসংখ্যক গাড়ি মালামাল লোড-আনলোড করার সময় সিগন্যাল দিয়ে সাধারণ পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কের সেতু ও কালভার্টগুলো ভেঙে ডাইভারশন তৈরি করা হচ্ছে।

এসব কারণে যানজটের শঙ্কা রয়েছে। এর ফলে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হবে পথেই। উন্নয়ন কাজের জন্য পাশে মাটি স্তূপ করে রাখার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই সড়ক কাদামাটিতে মাখামাখি হয়ে যায়।

সব মিলিয়ে ভোগান্তি এবারও সফর সঙ্গী হবে যাত্রীদের। অপরদিকে জরাজীর্ণ ও ভাঙাচোরার কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গত কয়েক বছরের ঈদসহ সারাবছরই দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহান। তবে মহাসড়কটির টেকেরহাট থেকে মোস্তফাপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করায় লক্কড়ঝক্কড় পরিস্থিতির কিছ–টা উন্নতি হয়েছে।

বড়ইতলা থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার অংশ ও মোস্তফাপুর থেকে ভুরঘাটা পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার অংশে আগেই সংস্কার হওয়ায় পরিস্থিতি সহনীয়। কিন্তু দুই লেনের সরু ও ব্যস্ততম এ মহাসড়কজুড়েই এজিনের পাশের মাটি সরে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।

রয়েছে অবৈধ যানবাহনের ছড়াছড়ি। এচাড়াও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মালিগ্রাম, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বড়ইতলা, ভুরঘাটাসহ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অস্থায়ী বাজার।

বাসচালক হালিম মিয়া বলেন, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ছয় লেনের কাজ চলমান থাকায় অনেক স্থানে ওয়ানওয়ে করে দেওয়া হয়েছে। এতে ওইসব অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

আর প্রতিনিয়ত মহাসড়কের কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন গাড়ি মালামাল লোড-আনলোড করায় গাড়ির জট বাধার শঙ্কা থাকে। ঈদের সময় উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখা ও অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্বে রাখা প্রয়োজন।

তা না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ট্রাকচালক ইমরান হোসেন বলেন, ঈদের সময় মহাসড়কে যানবাহনের ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের কয়েক স্থানে অস্থায়ী বাজার বসে। এতে গাড়ি চালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

আর নসিমন, করিমনের দৌরাত্ম্য তো আছেই। অন্তত ঈদের কয়েক দিন এগুলো প্রশাসনের দেখা উচিত। মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, ঈদের সময় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়বে।

তাই যাতে কোথাও যানজট সৃষ্টি না হয় সেজন্য ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আর অস্থায়ী হাটবাজার যেন কোথাও না বসতে পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কগুলো নিয়ে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের উন্নয়ন কার্মকা- বন্ধ রাখা হবে।

মহাসড়ক দুটিতে যাত্রী নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কোথাও কোনো অব্যবস্থাপনা দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র- আমাদের সময়

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন