২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশাল নগরীর আরও একটি ডায়াগনস্টিক সিলগালা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৩৩ অপরাহ্ণ, ২৫ জুলাই ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল:: নানা অনিয়ম অভিযোগে বরিশাল শহরের আরও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন। সেই সাথে আগরপুর রোডের ‘দি মুন মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামক ডায়াগনস্টিকটির মালিকসহ চার জনকে কারাদন্ডও দিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (২৫ জুলাই) দুপুরের এই অভিযানের দুদিন পূর্বে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাতে অনুরুপ অভিযোগে শহরের জর্ডান রোড এলাকার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে এবং ভুয়া ডাক্তারসহ তিন জনকে কারাদন্ড দেয়।

জেলা প্রশাসনের সূত্র জানায় ব্যাঙের ছাতার মতো বরিশাল নগরীর অলিতে-গলিতে গজিয়ে ওঠা ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও ফিজিওথেরাপি সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে ভুয়া ডাক্তার বসানোসহ রোগীগের রিপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা নেওয়া এবং ভুল রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এমন কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোর সরকারি লাইসেন্স বা অনুমোদন নেই। নাম সর্বস্ব এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন মাঠে নামে।

আগরপুর ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান বরিশালটাইমসকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরিশাল শহরের আগরপুর রোড এলাকায় ‘দি মুন মেডিক্যাল সার্ভিসেস’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়।

এ সময় শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট মুজিবুর রহমান ও ডা. জাকির হোসেন খন্দকারের স্বাক্ষরে শনিবার (২৫ জুলাই) তারিখে রোগীদের প্যাথলজি রিপোর্ট দিতে দেখা যায়। অথচ খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় ওই চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট কেউই এদিন ডায়াগনস্টিকে আসেননি। পরে ফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা মুন মেডিক্যাল সার্ভিসেসের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা ও এ ধরনের স্বাক্ষর দানের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে মালিকপক্ষকে জিজ্ঞেস করা হলে তারা কোনো জবাব পারেননি এবং উল্টো ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট ব্যবহার করে ল্যাবে বিভিন্ন মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করা, বাস্তবে কোনো সার্টিফাইড টেকনোলোজিস্টই না থাকা, এমনকি কোনো পরীক্ষা না করার বিষয়টিও অভিযানিক দলের সামনে আসে। পাশাপাশি ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হলেও নতুন করে নবায়ন না করা এবং নবায়ন করার জন্য কোনো আবেদন করার বিষয়টিও সামনে আসে।

সার্বিক বিবেচনায় মেডিক্যাল প্রাকটিস এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরিজ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২-এর ১৩(২) ধারায় দি মুন মেডিক্যাল সার্ভিসেসের মালিকপক্ষের হোসেন শাহীন ও শ্যামল মজুমদারকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

পাশাপাশি তাদের সহযোগী ইব্রাহিম রানা এবং শ্যাম সাহাকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন অভিযানে প্রসিকিউশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. মুন্সী মুবিনুল হক।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন