২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

ব্রিজ আছে সড়ক নেই, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৪৫ অপরাহ্ণ, ২৩ নভেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর বাজারটি জেলার অন্যতম প্রাচীন ব্যবসায়িক বন্দর। এই বন্দরকে ঘিরে নড়িয়া উপজেলাসহ চারটি উপজেলার ব্যবসায়ীরা বংশ পরম্পরায় দেড়শ বছরেরও বেশি সময় থেকে বাণিজ্য করে আসছেন। এছাড়াও নদীর ওপারের চারটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের চলাচল এই পথে।

প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের জুনে ব্রিজের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে সংযোগ সড়কের কাজ না হওয়ায় এখনও আগের মতোই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে নদী পাড় হতে হচ্ছে রোগী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের। আর ক্রেতা-বিক্রেতাকেও গুণতে হচ্ছে অধিক পরিবহন খরচ। তাই দ্রুত সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে জনদুর্ভোগ লাঘবে যাতায়াতের জন্য খুলে দেয়ার দাবি সর্বসাধারণের।

ভোজেশ্বর বন্দরের ব্যবসায়িক ঐতিহ্য ও লক্ষাধিক মানুষের সহজ চলাচলের জন্য বৃহত্তর ফরিদপুর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে কীর্তিনাশা নদীর ওপর ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯৯ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের জুন মাসে নির্মাণ সম্পন্ন হলেও সংযোগ সড়কের অভাবে এখনও জনগণের চলাচালের জন্য খুলে দেয়া সম্ভব হয়নি। বন্দরভিত্তিক ক্রেতা-বিক্রেতাদের পরিবহন ব্যয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জনদুর্ভোগও। ব্রিজের পশ্চিম পাড়ের জপসা, নশাসন, রাজনগর ও মোক্তারের চর ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক লোক নৌকায় করে পারাপার হচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। রোগীদের পড়তে হচ্ছে অধিক বিরম্বনায়।

ভোজেশ্বর বন্দরের ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল সরদার বলেন, ‘কীর্তিনাশা নদীর ওপর ব্রিজটি নির্মাণ করা এই বন্দরের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় সরকারের এতো বড় একটা উদ্যোগও জনগণের কোনও উপকারে আসছে না। ব্রিজটি চালু না হওয়ায় আমাদের বন্দরের ব্যবসায়তেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষের কাছে দ্রুত কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

জপসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বয়াতি বলেন, আমাদের দেড়শ বছরের পুরানো এই ভোজেশ্বর বন্দর। বন্দরের জন্য কীর্তিনাশা নদীর ওপর ব্রিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের জপসা ইউনিয়নসহ আরও তিনটি ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। বিশেষ করে রোগী, শিশু শিক্ষার্থী, কৃষকরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তবে বহুদিন কাজ বন্ধ থাকার পর কিছুদিন হয় নতুন করে আবার সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এখন কাজটা যদি দ্রুততার সঙ্গে করা হয়। তাহলে এসব এলাকার মানুষের দুঃখ-কষ্টও তাড়াতাড়ি শেষ হবে।
শরীয়তপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাজাহান ফরাজী বলেন, করোনা মহামারি ও এ মৌসুমে দির্ঘায়িত বন্যার ফলে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। তবে নতুন আরই ওয়াল প্রযুক্তির মাধ্যমে আগামী এপ্রিল নাগাদ সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন করে ব্রিজটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া যাবে বলে আশা করছি।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন