২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১৯ অপরাহ্ণ, ০১ নভেম্বর ২০১৮

সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সকালে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাগেরহাট জেলা স্টেডিয়ামে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন।

ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৫৬ জেলার ৩২১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এসময় বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন- আওয়ামী লীগ সরকার শত বাধা মোকাবিলা করে দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

সুন্দরবনে গত দুই বছরে আত্মসমর্পণ করেছে প্রায় আড়াইশ’ জলদস্যু। অস্ত্র জমা পড়েছে তিন শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুই হাজার গুলি।

এরই ধারাবাহিকতায় আগামী বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) বাগেরহাট জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে আরও কয়েকটি দস্যু বাহিনী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সুন্দরবন অঞ্চলে শান্তি ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এলাকার জেলেরা নির্ভয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।

তবে এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হলেও দস্যুদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। তাদের ভাষ্য, দস্যুদের অস্ত্রসহ অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। অন্যথায় তাদের ছত্রছায়ায় নতুন করে দস্যুবাহিনী মাথা চাড়া দিতে পারে। সুন্দরবন আবারও ত্রাসের রাজত্বে পরিণত হতে পারে।

অবশ্য এই আত্মসমর্পণের খবরে স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয় জেলেদের মনে। একইসঙ্গে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ শিকার ও রাজস্ব অর্জনের আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে প্রায় এক দশক সময় ধরে কাজ করছেন যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মোহসীন-উল হাকিম। ঘূর্ণিঝড় আইলায় উপকূলীয় অঞ্চল আক্রান্ত হওয়ার পর সেখানে সংবাদ সংগ্রহে যান তিনি। জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাদের জন্য বড় বাধা দস্যুরা। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে পারলে স্বাভাবিক ও নিরাপদ পরিবেশ ফিরে পাবেন জেলেরা।

২০০৯ সাল থেকে জলদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরুর পর তার হাত ধরে প্রথম সাফল্য আসে ২০১৬ সালের ৩১ মে। র‌্যাবের কাছে প্রথম আত্মসমর্পণ করে মাস্টারবাহিনীর সদস্যরা। এরপর একে একে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে ‘মজনু’, ‘ইলিয়াস’, ‘জাহাঙ্গীর’ ‘নোয়াব’, ও ‘বড় ভাই’ বাহিনীর মতো বড় বড় দস্যুবাহিনী।

দস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া ও শুরু সম্পর্কে যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মোহসীন-উল হাকিম বলেন, ‘আইলার পর আমি যখন সাতক্ষীরায় কাজ করতে যাই তখন ওখানকার জেলেরা বলছিলেন, তাদের কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা দস্যু। তখন বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করলাম। দেখলাম আসলেই দস্যুমুক্ত করতে পারলে সুন্দরবনের এই বিশাল জনগোষ্ঠী নিরাপদে জীবনযাপন করতে পারবে। এককথায়, বেঁচে যাবে তারা। সেখান থেকে ২০০৯ সালে কাজ শুরু। উদ্দেশ্য ছিল যেসব জেলে আক্রান্ত হয়, চাঁদা দিতে হয়, মুক্তিপণ দিতে হয় তাদের কীভাবে জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করা যায়।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন