বার্তা পরিবেশক অনলাইন:: গভীর রাতে ঘরে ঢুকে কৃষক স্বামীর গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদপুরে এক গৃহবধূকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ধর্ষণকারীদের বাধায় ওই গৃহবধূ চিকিৎসা নিতে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে আসতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বামী।

এছাড়াও ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করলে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে জানে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

গত শনিবার (২০ জুন) গভীর রাতে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৪ নম্বর রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড লক্ষ্মীরচরে এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে প্রকাশ পায়। অভিযোগ রয়েছে এলাকার কিছু মানুষ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

লোমহর্ষক ওই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ধর্ষিতা গৃহবধূর কৃষক স্বামী বলেন, এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আসমত আলী মিজি, বাবুল গাজী, ফয়সাল গাজী, রুহুলামিন মিজিসহ সাত থেকে আটজন মুখোশ পরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে। এ সময় তার গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার স্ত্রীকে পাশের ঘরে জোরপূর্বক নিয়ে একের পর এক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় তিনজনের মুখোশ খোলা থাকায় তাদেরকে খুব সহজে চিনে ফেলেন গৃহবধূর স্বামী।

এলাকাবাসী জানায়, এই ঘটনা রবিবার দুপুরে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওসমান গাজীসহ কয়েকজনকে জানালে তারা ধর্ষণকারী কয়েকজনকে এনে সালিশি বৈঠক করেন। পরে সবার উপস্থিতিতে তাদেরকে জুতাপেটা করে ছেড়ে দেয়া হয়।

সালিশি বৈঠকে অংশ নেয়া ওসমান গাজীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বৈঠকের কথা অস্বীকার করে বলেন, গণধর্ষণের ঘটনাটি আমাকে জানায়নি। আমি সালিশি বৈঠক করিনি। যদি জানাতেন তাহলে সমাধান করে দিতাম। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগও আসেনি।

ধর্ষিতা গৃহবধূর স্বামী আরও বলেন, এই ঘটনার পর অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধর্ষকরা বাধা দেন এবং ঘটনাটি অন্য কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনার পর থেকে আমরা পুরো পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায়। যেকোনো সময় আবারও এই ধর্ষণকারীরা অনুরুপ ঘটনা ঘটাতে পারে। এই ঘটনায় ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বলেন, রাতের আঁধারে অভিযুক্তরা ঘরে ঢুকে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পাশের রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। তাদের হাতে পায়ে ধরে মাফ চাইলেও রেহাই না দিয়ে তারা নির্মমভাবে একের পর এক সবাই এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সন্তান থাকায় নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। এখন শুধু প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি, ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম উদ্দিন বলেন, এ ধরনের ঘটনার কথা শুনেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।