dreamliferupatolibarisal

বরিশাল

বানারীপাড়ায় কৃষকদল নেতা হত্যা মামলায় জামায়াত নেতাদের আসামী করায় ক্ষোভ

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৮:৪২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বানারীপাড়ায় কৃষকদল নেতা হত্যা মামলায় জামায়াত নেতাদের আসামী করায় ক্ষোভ

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ (৫৫) নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে অপ রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে।

দুই বিএনপি কর্মীর তর্কাতর্কীর জেরে এই হত্যাকান্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মামলায় আসামী করা হয়েছে মসজিদের ইমামসহ কয়েকজন জামায়াতের নেতাকর্মীকে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে  ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ইব্রাহীম হাওলাদার বলেন, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে করফাকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে স্থানীয় বিএনপি কর্মী দেলোয়ার হোসেন ঘরামীর সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক

আবদুল লতিফের। একপর্যায়ে দেলোয়ার হোসেন ঘরামী কয়েকটি থাপ্পর মারেন আবদুল লতিফকে। এতে আবদুল লতিফ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এখানে শুরু থেকেই উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় আল মামুন, ইসমাইল চৌকিদার, হিরু হাওলাদার ও মনির সহ আরো অনেকে। অথচ দায়েরকৃত মামলাটিতে প্রকৃত প্রত্যক্ষদর্শী এসব ব্যক্তিদেরকে স্বাক্ষী রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, আবদুল লতিফকে চরথাপ্পর মেরেছে দেলোয়ার। কোন সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনা দেখিনি। ওখানে উপস্থিত অন্যান্যরা উভয়কে ছাড়িয়ে দিয়েছে। আমি নিজে আবদুল লতিফকে হাসপাতালে নিতে সাহায্য করেছি।

অথচ মামলায় আমাকেও আসামী করা হয়েছে। তাছাড়া জামায়াতের কয়েকজন নেতাকে আসামী করা হয়েছে যারা আদৌ সেদিন ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। এমনকি মসজিদের ইমাম সাহেবকেও আসামী করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, অভিযুক্ত দেলোয়ার একজন বিএনপি কর্মী। গত ৬ সেপ্টেম্বর বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠন অনুষ্ঠানে তার ছিল সরব উপস্থিতি। সেই ছবি এখনো অনলাইন ও ফেসবুকে রয়েছে।

করফাকর বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জাহিদুল ইসলাম বলেন, আবদুল লতিফ ভাই আমার মসজিদের মুসল্লী ছিলেন। আসরের নামাজের পর মারামারির সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই।

কিন্তু ততক্ষণে লতিফ ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। অথচ আমাকেও এই মামলায় আসামী করা হয়েছে। আমি অত্যন্ত আশ্চার্যম্বিত হয়েছি। তাছাড়া এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রমরমা মামলা বাণিজ্য।

নিহতের পরিবারকে জিম্মি করে মামলায় নীরিহ জামায়াতের লোকদের আসামী করে এই বাণিজ্য করছে একটি মহল। এ ঘটনায় অসংখ্য নির্দোষ পুরুষ এখন বাড়িছাড়া ।

ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আল মামুন বলেন, যেহেতু মামলা হয়েছে। তাই অযথা এই মুহুর্তে কোন কথা বলে বিপদে পড়তে চাইনা। কেননা এলাকায় অনেকেই এখন আতঙ্কে আছে।

সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মোহাম্মদ ফেরদাউস বলেন, ঘটনার দিন আমি ছিলাম উজিরপুরে। সেখান থেকে আমি এলাকায় ফিরে মৃধাবাড়ি মসজিদে আসরের নামাজ পড়ি। এরপর শুনতে পাই করফাকর স্কুল প্রাঙ্গনে মারামারি হয়েছে।

আমি আদৌ ঘটনাস্থলেই যাইনি। অথচ আমি সহ জামায়াতের নায়েবে আমির হাফেজ নাজিমউদ্দিন ও যুব জামায়াতের নেতা জাহিদুল ইসলামকে  আসামী করা হয়েছে।  বিএনপি নেতারা আমাদেরকে আসামী করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে এলাকায় দফায় দফায় মিছিল বের করে।

তিনি আরো বলেন, মামলায় বাদীপক্ষকে জবরদস্তি করে জামায়াতের লোকদেরকে আসামী দিয়েছে বিএনপি নেতারা। এতে একদিকে নিরীহ লোকজন হয়ারানি হচ্ছে।

অপরদিকে হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া অভিযুক্ত দেলোয়ার একজন বিএনপি কর্মী। তাকে এখন জামায়াত সাজিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা চলছে।

সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন জামায়াতের নায়েবে আমির হাফেজ নাজিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি ঘটার অনেক সময় পরে আমি খবর পেয়েছি। অথচ আমাকেও আসামী করা হয়েছে।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা এটিকে নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। তারা নিহতের পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে নির্দোষ লোকগুলোকে আসামী দিয়েছে। জামায়াতের উপরে দায় চাপিয়ে তারা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা চালাচ্ছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে।

মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী পারভীনা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি তিনজন আসামীর নাম দিয়েছি। এই তিনজনের মধ্যে জামায়াতের কারো নাম ছিলো না, অন্যান্য নাম অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে পুলিশ ও বিএনপি নেতারা বলতে পারবেন।

আমি ন্যায় বিচার চাই। এ বিষয়ে সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, যেসব লোকদের আসামী করা হয়েছে তারা অনেকে ঘটনাস্থলে ছিল, অনেকে কাছাকাছি ছিল। কেননা আসামীরা সকলেই করফাকরের বাসিন্দা।

আমরা এটা নিয়ে রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলে তো পুরো উপজেলা জামায়াতের লোকজনকে আসামী দিতে পারতাম, তা তো দেইনি।
বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মৃধা বলেন, আমরা এটা নিয়ে কোন রাজনীতি করছিনা।

ভুক্তভোগী পরিবারকে সহযোগিতা করছি। কেননা আবদুল লতিফ ছিল দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা। হত্যাকারী দেলোয়ার বিএনপির কর্মী নয়, সে জামায়াতের সমর্থক বলে মন্তব্য করেন রিয়াজ মৃধা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আরাফাত হাসান বলেন, মামলাটি তদন্তনাধীন আছে। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বানারীপাড়া থানার ওসির দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শতদল মজুমদার বলেন, হ্যাকান্ডের পর ভুক্তভোগী পরিবার মামলা দিয়েছে।

আসামী ও স্বাক্ষীদের নাম তারাই দিয়েছে। তবে কোন নির্দোষ ব্যক্তি আসামী হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই আমরা প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনবো।

প্রসঙ্গত, সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে হত্যাকান্ডের শিকার হন। রোবাবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নিহতেরর  স্ত্রী পারভীনা বেগম বাদী হয়ে তিন জামায়াত নেতাসহ ৯ জনকে সুনির্দিষ্ট ও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে বানারীপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে মামলার এজাহারনামীয় দুই নম্বর আসামী  তুহিনকে ভোলা শহর থেকে র ্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন:

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ০০:৪২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের দেড় মাস পর ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার এবং ২১ শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ২৫ শিক্ষার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর অ্যাজেন্ডা রেজল্যুশন আকারে অনুমোদন শেষে বৃহস্পতিবার তা সার্কুলেশন হয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের শাহারিয়ার শাওন এবং অ্যাকাউন্টিং বিভাগের তরিকুল ইসলাম নয়ন।

এর মধ্যে শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেনকে ছয় মাস বা এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, তরিকুল ইসলাম নয়নকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ৪০ হাজার টাকা জরিমানা এবং শাহারিয়ার শাওনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কেটিং বিভাগের ১০ জন এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১১ শিক্ষার্থীকে তাঁদের অভিভাবকসহ আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টরের কাছে হাজির হয়ে মুচলেকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রক্টর ড. রাহাত বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে এ সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই সংঘর্ষের পর বিষয়টি সিন্ডিকেট পর্যন্ত গড়ায়।

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:০৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

এবার বরিশালের বানারীপাড়ায় শিক্ষাগত যোগ্যতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে উপজেলার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়া সেই অপসারিত বিএনপি নেতা সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মামুন ফরাজী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। বিচারক মো. খোকন হোসেন মামলার অভিযোগ তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে ১৪ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর নির্দেশে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ থেকে বিএনপি নেতা সবুর খানকে অপসারন করা হয়। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মোঃ রফিকুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত পত্রে সবুর খানকে বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বায়েজিদুর রহমানকে সভাপতি মনোনীত করে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। 

এদিকে  শুধু পদ থেকে অপসারণই নয় জালিয়াতি-প্রতারণা ও অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে সদ্য অসারিত সভাপতি আব্দুস সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিচারের দাবি করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির  অনুমোদন দেয়। এতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খানকে সভাপতি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল কমিটির সভাপতি হতে হলে তাকে কমপক্ষে স্নাতক পাশ হতে হবে। বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের সময়ে দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে  সবুর খান নিজেকে বিএ পাস উল্লেখ করেন। কিন্তু এর  অনুকূলে তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কোনো কপি জমা দেননি। শিক্ষাবোর্ডে  অভিযোগকারী স্থানীয় মামুন ফরাজীর দাবী ছিল বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খান  তার বায়োডাটায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএ পাস উল্লেখ করেছেন। মূলত তিনি এসএসসি পাস। বিএনপির নেতা হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের যোগসাজশে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রায় দেড়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার বিএ পাসের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ৫ হাজার টাকা ফি জমা দিয়ে গত ২৮ আগস্ট তিনি আবেদন করেন। মামুন ফরাজীর লিখিত ওই আবেদন করার প্রায় এক মাস  পরে বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে সহকারি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব বিদ্যালয় নিবন্ধন) মোঃ মাছুম মিয়া গত ২৩ সেপ্টেম্বর বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন। কিন্তু ২২ দিনেও আবেদনকারীকে এর ফলাফল প্রদান ও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছিল না ফলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ১৪ অক্টোবর লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়। ফলে ওইদিনই স্কুল সভাপতি পদ থেকে সবুর খানকে অপসারণ করা হয়।

অপরদিকে পরস্পরের যোগসাজশে ওই বিদ্যালয়ের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ৫ -৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ, প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পরেও প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে বেতন ও তিন হাজার টাকা করে মোবাইল বিল নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সম্প্রতি সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলম ও সদ্য অপসারিত সভাপতি সবুর খানের বিরুদ্ধে  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশালের আঞ্চলিক  পরিচালকের কাছে মামুন ফরাজী লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়টিও তদন্তনাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হল।

ফুটপাথে হালিম বিক্রির অন্তরালে মাদক বাণিজ্য, অবশেষে নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৪৬

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ফুটপাথে হালিম বিক্রির অন্তরালে মাদক বাণিজ্য,  অবশেষে নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডসংলগ্ন রূপালী ব্যাংকের সামনে হালিম বিক্রেতা জাহিদ ওরফে মামা জাহিদ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। নগরীর সদর রোডে মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ এক নারী ও  পুরুষকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের অভিযানিক দল।

সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত ১০টার দিকে কোতয়ালি মডেল থানাধীন সদর রোডে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে রূপালী ব্যাংক পিএলসি’র সামনে মো. জাহিদ সরদারের হালিম ও চটপটির দোকানের পাশে বসা এক নারীকে তল্লাশি করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৩১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

আটক নারী পারভীন বেগম (৪১) বরিশাল নগরীর গোড়াচাঁদ দাস রোডের বাসিন্দা। একই ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা মো. জাহিদ সরদার (৪৪), কোতয়ালি মডেল থানার দপ্তরখানা এলাকার বাসিন্দাকেও ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয়।

সদর রোড এলাকার ব্যবসায়ী কবির জানান, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জাহিদ ওরফে মামা জাহিদ দীর্ঘদিন ধরে সদর রোডে হালিম বিক্রির আড়ালে মাদক বিক্রি করে আসছে। শুধু তাই সদর রোড এলাকাকে গড়ে তুলে মাদক কেনা-বেচার হাট। তার হালিম বিক্রি শুধু লোভ দেখানো। তার মূল ব্যবসাই হলো মাদক। 

হাওলাদার নামে এক দোকান কর্মচারী সাংবাদিকদের বলেন, জাহিদ গরীব ঘরে সন্তান। তিনি আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেতে। তিনি হঠাৎ আলাউদ্দীনের চেরাগ পেয়েছে।  যেমন মাদক বিক্রির টাকায় নগরীর কাশিপুর এলাকায় মাদক বিক্রির টাকায় করেছেন বহুতল ভবন।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, মাদকবিরোধী অভিযানের আটক জাহিদ ও পারভীনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। 

বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বরিশালটাইমসকে বলেন, মাদকসহ নারী এবং পুরুষকে আটকের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে আমরা তাদেরকে আদালতে প্ররণ করি। পরে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠান।’

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.