dreamliferupatolibarisal

বরিশাল

নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে আর অধ্যাপনা বাবুগঞ্জেঃ পাঠদান ছাড়াই নেন বেতনভাতা!

আরিফ আহমেদ মুন্না

আরিফ আহমেদ মুন্না

২৪ আগস্ট, ২০২৫ ২৩:৩৩

প্রিন্ট এন্ড সেভ

নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে আর অধ্যাপনা বাবুগঞ্জেঃ পাঠদান ছাড়াই নেন বেতনভাতা!

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন সাহেদা পারভীন। পড়াতেন পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে ২০২৪ সালে তথ্য গোপন করে অর্জিত ছুটি নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। গ্রহণ করেন যুক্তরাষ্ট্র নাগরিকত্ব। তবে কলেজে ক্লাস না করেও তিনি নিয়মিত তুলছিলেন তার বেতন ভাতা। অপারেশনের অজুহাত দিয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ছুটিতে থাকার জন্য করেছিলেন আবেদন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এ ঘটনা ফাঁস হওয়ার পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের জন্য উল্টো কলেজের বিরুদ্ধে অপপ্রচার আর চাপসৃষ্টি করছেন। দেশে না থেকেও ২০২৭ সাল পর্যন্ত চাকরি এবং বেতন-ভাতা চালু রেখে অবসরে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি। এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের পৌরনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাহেদা পারভীনের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে এসব অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।

জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য গোপন করে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর অর্জিত ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের পৌরনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাহেদা পারভীন। বিদেশে যাওয়ার জন্য তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি নেননি। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকেও বিদেশে অবস্থানের বিষয়টি দীর্ঘদিন গোপন রাখেন। ৪ মাসের লম্বা ছুটিতে থাকার পরে ছুটি শেষে তিনি অধ্যক্ষকে জানান, চিকিৎসার প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন এবং সুচিকিৎসার জন্য ছুটি আরো ২ মাস বাড়ানো দরকার। চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ মানবিক কারণে চলতি বছরের ২১ জুন পর্যন্ত তার বর্ধিত ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেন। চিকিৎসা শেষ করে জুনে দেশে এসে কলেজে তার যোগদান করার কথা থাকলেও তিনি তালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি আবারও ছুটি বাড়ানোর আবেদন করেন। এবার তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তার একটি অপারেশন করাতে দীর্ঘ সিরিয়ালের অজুহাত দিয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সিএল ছুটির জন্য আবেদন করেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ তার ছুটির আবেদন নাকচ করে দিয়ে ১ জুলাইয়ের মধ্যে দেশে ফিরে এসে কলেজে যোগদান করার নির্দেশ দেন।

এরপরে কলেজে যোগদানের জন্য তাকে পরপর ৩টি নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি দেশে ফেরেননি। নোটিশ দেওয়ার পরেও টানা ২ মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে কলেজে গভর্নিং কাউন্সিলের সভা ডাকা হয়। গত ২১ আগস্ট ওই সভায় তাকে সশরীরে হাজির হয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গোপনে দেশত্যাগের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। তথ্য গোপন করে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া বিদেশ গমন, সেখানে নাগরিকত্ব গ্রহণ এবং কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ ওই সভায় প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেইসঙ্গে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এসময় এসব গুরুতর অনিয়মের প্রেক্ষিতে কেন তাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে না, এই মর্মে একটি শোকজ লেটারও ইস্যু করা হয়। এদিকে তিনি গত ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিত বেতনভাতা তুলে নিচ্ছেন। এছাড়াও এভাবে বিদেশে বসে ২০২৭ সালে তার চাকরি জীবনের ২৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত বেতনভাতা তুলে পূর্ণ সুযোগসুবিধাসহ অবসরে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তার এই অনৈতিক প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের উপর বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করছেন বলেও জানা যায়।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ তাহমিনা আক্তার বলেন, 'চিকিৎসার কথা বলায় মানবিক কারণে ২১ জুন পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক সাহেদা পারভীনের ছুটি মঞ্জুর করেছে কলেজের গভর্নিং বোর্ড। ইএফটি'র মাধ্যমে বেতন-ভাতা সরাসরি তার ব্যাংক একাউন্টে চলে যায় বিধায় আমাদের পক্ষে তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বৈধ কোনো অনুমোদন ছাড়াই কাউকে না জানিয়ে গোপনে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন এবং সেখানের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি অত্র কলেজে আর ক্লাস নিতে পারবেন না, এটা তিনি নিশ্চিত করার পরেই তাকে কলেজ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে ২০২৭ সাল পর্যন্ত তার ছুটি মঞ্জুর করার জন্য গভর্নিং বোর্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। যাতে তিনি চাকরির ২৫ বছর পূর্ণ করে বাংলাদেশ থেকে তার সম্পূর্ণ পেনশন সুবিধা নিতে পারেন। তার এই অনৈতিক প্রস্তাব কলেজের গভর্নিং বডি প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষিপ্ত হন তিনি। এদিকে দীর্ঘদিন তিনি কলেজে অনুপস্থিত থাকায় তার সাবজেক্টে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।'

চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও বরিশাল জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক এইচ.এম তসলিম উদ্দিন বলেন, 'যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তথ্য গোপন করে বিদেশ গমন, নাগরিকত্ব গ্রহণ এবং কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার কারণে সহকারী অধ্যাপক সাহেদা পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সাথে কেন তাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান এবং শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের নির্দেশে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও কলেজের পদ ছাড়তে চাইছেন না তিনি। ২০২৭ পর্যন্ত চাকরি বহাল রেখে বাংলাদেশ থেকে বেতনভাতাসহ পূর্ণ পেনশন সুবিধা নিতে চাইছেন। তার এই অন্যায় অযৌক্তিক দাবি প্রত্যাখ্যান করে তাকে চাকরি বিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং সশরীরে কলেজে উপস্থিত হয়ে এর উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।'

এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক সাহেদা পারভীনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে সরাসরি অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। এসব বিষয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এ বিষয় নিয়ে তাকে বিরক্ত না করার জন্যেও অনুরোধ করেন। তার আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য গ্রহণের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ম্যাসেজ দিয়ে অনুরোধ জানালেও তাতে কোনো সাড়া দেননি তিনি। #

আরও পড়ুন:

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ০০:৪২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘাত/ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের দেড় মাস পর ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসন। সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার এবং ২১ শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ২৫ শিক্ষার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর অ্যাজেন্ডা রেজল্যুশন আকারে অনুমোদন শেষে বৃহস্পতিবার তা সার্কুলেশন হয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের শাহারিয়ার শাওন এবং অ্যাকাউন্টিং বিভাগের তরিকুল ইসলাম নয়ন।

এর মধ্যে শাওন শেখ ও সাজ্জাদ হোসেনকে ছয় মাস বা এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, তরিকুল ইসলাম নয়নকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ৪০ হাজার টাকা জরিমানা এবং শাহারিয়ার শাওনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কেটিং বিভাগের ১০ জন এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১১ শিক্ষার্থীকে তাঁদের অভিভাবকসহ আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টরের কাছে হাজির হয়ে মুচলেকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রক্টর ড. রাহাত বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে এ সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই সংঘর্ষের পর বিষয়টি সিন্ডিকেট পর্যন্ত গড়ায়।

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:০৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বানারীপাড়ায় অপসারিত স্কুল সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

এবার বরিশালের বানারীপাড়ায় শিক্ষাগত যোগ্যতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে উপজেলার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়া সেই অপসারিত বিএনপি নেতা সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মামুন ফরাজী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। বিচারক মো. খোকন হোসেন মামলার অভিযোগ তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে ১৪ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর নির্দেশে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ থেকে বিএনপি নেতা সবুর খানকে অপসারন করা হয়। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মোঃ রফিকুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত পত্রে সবুর খানকে বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বায়েজিদুর রহমানকে সভাপতি মনোনীত করে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। 

এদিকে  শুধু পদ থেকে অপসারণই নয় জালিয়াতি-প্রতারণা ও অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে সদ্য অসারিত সভাপতি আব্দুস সবুর খান ও সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের বিচারের দাবি করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির  অনুমোদন দেয়। এতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খানকে সভাপতি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল কমিটির সভাপতি হতে হলে তাকে কমপক্ষে স্নাতক পাশ হতে হবে। বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের সময়ে দেওয়া জীবনবৃত্তান্তে  সবুর খান নিজেকে বিএ পাস উল্লেখ করেন। কিন্তু এর  অনুকূলে তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কোনো কপি জমা দেননি। শিক্ষাবোর্ডে  অভিযোগকারী স্থানীয় মামুন ফরাজীর দাবী ছিল বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খান  তার বায়োডাটায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএ পাস উল্লেখ করেছেন। মূলত তিনি এসএসসি পাস। বিএনপির নেতা হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলমের যোগসাজশে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রায় দেড়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার বিএ পাসের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ৫ হাজার টাকা ফি জমা দিয়ে গত ২৮ আগস্ট তিনি আবেদন করেন। মামুন ফরাজীর লিখিত ওই আবেদন করার প্রায় এক মাস  পরে বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশক্রমে সহকারি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব বিদ্যালয় নিবন্ধন) মোঃ মাছুম মিয়া গত ২৩ সেপ্টেম্বর বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন। কিন্তু ২২ দিনেও আবেদনকারীকে এর ফলাফল প্রদান ও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছিল না ফলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ১৪ অক্টোবর লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়। ফলে ওইদিনই স্কুল সভাপতি পদ থেকে সবুর খানকে অপসারণ করা হয়।

অপরদিকে পরস্পরের যোগসাজশে ওই বিদ্যালয়ের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ৫ -৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ, প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পরেও প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে বেতন ও তিন হাজার টাকা করে মোবাইল বিল নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সম্প্রতি সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলম ও সদ্য অপসারিত সভাপতি সবুর খানের বিরুদ্ধে  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশালের আঞ্চলিক  পরিচালকের কাছে মামুন ফরাজী লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়টিও তদন্তনাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হল।

ফুটপাথে হালিম বিক্রির অন্তরালে মাদক বাণিজ্য, অবশেষে নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৪৬

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ফুটপাথে হালিম বিক্রির অন্তরালে মাদক বাণিজ্য,  অবশেষে নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডসংলগ্ন রূপালী ব্যাংকের সামনে হালিম বিক্রেতা জাহিদ ওরফে মামা জাহিদ ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। নগরীর সদর রোডে মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবাসহ এক নারী ও  পুরুষকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের অভিযানিক দল।

সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত ১০টার দিকে কোতয়ালি মডেল থানাধীন সদর রোডে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে রূপালী ব্যাংক পিএলসি’র সামনে মো. জাহিদ সরদারের হালিম ও চটপটির দোকানের পাশে বসা এক নারীকে তল্লাশি করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৩১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

আটক নারী পারভীন বেগম (৪১) বরিশাল নগরীর গোড়াচাঁদ দাস রোডের বাসিন্দা। একই ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা মো. জাহিদ সরদার (৪৪), কোতয়ালি মডেল থানার দপ্তরখানা এলাকার বাসিন্দাকেও ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয়।

সদর রোড এলাকার ব্যবসায়ী কবির জানান, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জাহিদ ওরফে মামা জাহিদ দীর্ঘদিন ধরে সদর রোডে হালিম বিক্রির আড়ালে মাদক বিক্রি করে আসছে। শুধু তাই সদর রোড এলাকাকে গড়ে তুলে মাদক কেনা-বেচার হাট। তার হালিম বিক্রি শুধু লোভ দেখানো। তার মূল ব্যবসাই হলো মাদক। 

হাওলাদার নামে এক দোকান কর্মচারী সাংবাদিকদের বলেন, জাহিদ গরীব ঘরে সন্তান। তিনি আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেতে। তিনি হঠাৎ আলাউদ্দীনের চেরাগ পেয়েছে।  যেমন মাদক বিক্রির টাকায় নগরীর কাশিপুর এলাকায় মাদক বিক্রির টাকায় করেছেন বহুতল ভবন।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, মাদকবিরোধী অভিযানের আটক জাহিদ ও পারভীনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। 

বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বরিশালটাইমসকে বলেন, মাদকসহ নারী এবং পুরুষকে আটকের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে আমরা তাদেরকে আদালতে প্ররণ করি। পরে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠান।’

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.