primary-ads

আন্তর্জাতিক

তেহরানে বাংলাদেশিদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে দূতাবাস

Barishal Times Desk

Barishal Times Desk

১৭ জুন, ২০২৫ ২০:৪১

প্রিন্ট এন্ড সেভ

তেহরানে বাংলাদেশিদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে দূতাবাস

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে তেহরানে অবস্থানরত ৪০০ বাংলাদেশি গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদেরকে এরই মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার তৎপরতা শুরু করেছে দূতাবাস। এখন পর্যন্ত ১০০ বাংলাদেশি নিরাপত্তা ইস্যুতে দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়েছে, তাদেরকে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে ইরানে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী মঙ্গলবার এসব তথ্য জানান।

ভারপ্রাপ্ত সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক বলেন, ইরানে প্রায় ২ হাজারের বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন। এর মধ্যে তেহরানে আছেন প্রায় ৪০০ জন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের ৪০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও রয়েছেন। ইসরাইলের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থানরত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি বর্তমানে গুরুতর নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছেন। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। গত সোমবার রেডিও তেহরানের কার্যালয় ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছে। রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগে কমপক্ষে ৮জন বাংলাদেশি সাংবাদিক কাজ করেন। হামলার সময় তারা অফিসেই ছিলেন। তবে তারা নিরাপদ ছিলেন।

ভারপ্রাপ্ত সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক বলেন, এরই মধ্যে তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই স্থানান্তরের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তেহরানে অবস্থানরত ১০০ জন বাংলাদেশি নিরাপদ আশ্রয় চেয়ে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তাদের নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার জন্য সকল ধরনের (বাসস্থান, খাবার, ওষুধসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ভার বাংলাদেশ সরকার বহন করছে) সহযোগিতা করা হচ্ছে। শুধু তাদেরই নয় যারাই আমাদের সহযোগিতা চাইবেন তাদের সহযোগিতা দেওয়া হবে। এজন্য হট লাইন চালু করা হয়েছে। তেহরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যে নিজের বাসভবন ছেড়ে তুলনামূলক নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন। তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসও ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা দূতাবাসও নিরাপদ কোনো স্থানে সরিয়ে নিচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ইরান থেকে বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সহজ নয়। ইরানের সঙ্গে আকাশ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সহজেই ইরান ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার স্থলপথে ইরান থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও নিরাপদ নয়। তাই তেহরান থেকে ইরানের মধ্যেই নিরাপদ দূরত্বে বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। একইসঙ্গে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠানো অত্যন্ত কঠিন। তবে আমরা বিকল্প পথ খুঁজছি। এইক্ষেত্রে আমাদের বন্ধু দেশসহ ইরানের সহযোগিতা নিচ্ছি।

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়তে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই ঘটনার খুব বেশিদিন হয়নি এবং এমন পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা আমাদের জানা নাই। তাই অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে তা এখনই আমরা নিরূপণ করতে পারিনি।

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান কী? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিফিংয়ে বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একটি স্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যের সমর্থনে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে গত ১৩ জুন বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কূটনীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাই স্থায়ী শান্তির একমাত্র কার্যকর পথ। বাংলাদেশ সকল পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং অস্থিতিশীল এ অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এ হামলা জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতি ও ইরানের সার্বভৌমত্বের প্রতি স্পষ্ট লঙ্ঘন। এধরনের হামলা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তায় একটি গুরুতর হুমকি এবং এটি সুদূরপ্রসারী পরিণতি ডেকে আনবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইরানে বসবাসকারী সকল বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়স্বজন জরুরি পরিস্থিতিতে দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিম্নলিখিত মোবাইল ফোন নম্বরগুলোতে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) সরাসরি যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরান হটলাইন: +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা হটলাইন: +৮৮০১৭১২০১২৮৪৭।

আরও পড়ুন:

ভারতে সেতু ভেঙে একাধিক গাড়ি নদীতে, নিহত ৯

Barishal Times Desk

Barishal Times Desk

০৯ জুলাই, ২০২৫ ১৭:৩৫

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ভারতে সেতু ভেঙে একাধিক গাড়ি নদীতে, নিহত ৯

ভারতের গুজরাটে সেতু ভেঙ্গে চারটি গাড়ি মহিসাগর নদীতে পড়ে যাওয়ার মতো একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার (৯ জুলাই) সকালে ভদোদরা জেলায় এ ঘটনায় ৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, ওই সময় সেতুটি দিয়ে ২টি ট্রাক, ১টি পিকআপ ভ্যান ও একটি প্রাইভেটকার পার হচ্ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ করে সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়ে এবং গাড়িগুলো নদীতে পড়ে যায়। ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু করেন ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সদস্যরা।

জানা যায়, এই সেতুতে প্রতিদিন প্রচুর গাড়ি চলাচল করত। তার মধ্যে ভারী পণ্যবাহী লরি যেমন থাকত, তেমনই ছিল ছোট-বড় গাড়ি। নিত্যদিন যানজট লেগে থাকত। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর দিকে নজর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘গম্ভীরা সেতু দিয়ে যাতায়াত দিন দিন ভয়ের হয়ে উঠছিল। যানজট তো লেগেই থাকত। এখন ওই সেতু সুইসাইড পয়েন্ট! নিত্যদিন দুর্ঘটনা হয়। সেতুর অবস্থা নড়বড়ে। এ নিয়ে বার বার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু ব্যবস্থা নেননি কেউ।’

বুধবার দুর্ঘটনার সময় যে সব ছবি এবং ভিডিও দেখা গেছে- তা এককথায় ভয়ঙ্কর। দেখা যায়, সেতুর একটি গোটা অংশ নিমেষে ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। একের পর এক গাড়ি নদীতে পড়ে। একটি তেলের ট্যাঙ্কার সেতুর কোণে ছিল, একটুর জন্য এটি রক্ষা পেয়েছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘হঠাৎ বিকট আওয়াজ পেলাম। আমার চোখের সামনেই চার-চারটি গাড়ি নদীতে পড়ল। দুটো লরি, একটি বোলেরো এবং একটি পিক আপ ভ্যান সেতু থেকে পড়ল...।’

ভদোদরা প্রশাসন দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ নিয়েও কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে সেতু বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল ঘিরে দিয়েছে পুলিশ। ক্রেন, ডুবুরি লাগানো হয়েছে উদ্ধারকাজে। গুজরাটের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হৃষীকেশ প্যাটেল অবশ্য দাবি করেছেন, রক্ষণাবেক্ষণে নজর দিয়েছিল সরকার। তিনি বলেন, ‘গম্ভীরা সেতু তৈরি হয় ১৯৮৫ সালে। প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ হয়েছে। বিপর্যয়ের আসল কারণ খোঁজা হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সেতু বিপর্যয় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। মৃতদের জন্য শোকপ্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ২ লাখ করে রুপি দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে। আহতরা পাবেন ৫০ হাজার করে।

মিয়ানমারে তুমুল সংঘর্ষ, পালাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ

Barishal Times Desk

Barishal Times Desk

০৭ জুলাই, ২০২৫ ১৮:২৮

প্রিন্ট এন্ড সেভ

মিয়ানমারে তুমুল সংঘর্ষ, পালাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা-বিরোধী সশস্ত্র দুটি গোষ্ঠীর মাঝে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চলমান এই সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে দেশটির হাজার হাজার শরণার্থী পালিয়ে প্রতিবেশী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মিজোরাম রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন।

সোমবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতের জ্যেষ্ঠ এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, গত ২ জুলাই মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যের কৌশলগত বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই গোষ্ঠী চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (সিএনডিএফ) ও চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স-হুয়ালংরাম (সিডিএফ-এইচ) মাঝে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সেদিন থেকেই চিন রাজ্যের হাজার হাজার শরণার্থী সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরামে ঢুকতে শুরু করেন।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, চিন রাজ্যে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে প্রায় ৪ হাজার শরণার্থী সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরামে পাড়ি জমিয়েছেন।

মিয়ানমারের চিন রাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকা বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সীমান্ত রয়েছে। মিজোরামের বাসিন্দাদের সঙ্গে মিয়ানমারের চিন জনগোষ্ঠীর জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকেই হাজার হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে আসছে মিজোরাম।

মিজোরামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে সাপদাঙ্গা মিয়ানমারের নতুন শরণার্থীদের ওই রাজ্যে পৌঁছানোর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের সংখ্যা ৩ হাজার হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাপদাঙ্গা বলেন, ‘‘চিন রাজ্যের এই সংঘর্ষ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মানুষ চলে এসেছে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা তাদের পানি, খাদ্য ও আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছি।’’

আর ভারতীয় ওই নিরাপত্তা বলেছেন, রোববার রাত পর্যন্ত রাজ্যের চাম্পাই জেলার জোখাওথার ও সাইখুমফাই গ্রামে মোট ৩ হাজার ৯৮০ জন শরণার্থীকে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শরণার্থীদের এই সংখ্যা প্রাথমিক এবং ক্রমাগত তা পরিবর্তন হচ্ছে। শুরুতে অল্প-সংখ্যক মানুষ এসেছিলেন। তবে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করায় ও সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় আরও বেশিসংখ্যক মানুষ আসতে শুরু করেন। এই বিষয়ে জানতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের একজন মুখপাত্রকে টেলিফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

সূত্র: রয়টার্স।

মাস্কের নতুন দলের নাম ‘আমেরিকা পার্টি’

Barishal Times Desk

Barishal Times Desk

০৬ জুলাই, ২০২৫ ১৬:৩০

প্রিন্ট এন্ড সেভ

মাস্কের নতুন দলের নাম ‘আমেরিকা পার্টি’

টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্ক নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মাস্ক এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

তিনি জানান, ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। দলটিকে তিনি রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট—এই দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের আধিপত্যের বিরুদ্ধে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে উপস্থাপন করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নাটকীয় বিরোধে জড়িয়ে পড়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই এ ঘোষণা দিলেন তিনি। তবে দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধিত হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জন্ম নেওয়ায় মাস্ক নিজে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অযোগ্য। দলের নেতৃত্বে কে থাকবেন, তাও উল্লেখ করেননি তিনি।

ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়ানোর সময়ই মাস্ক প্রথম এই দল গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং তার সাবেক মিত্র ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র বাকযুদ্ধে লিপ্ত হন।

সেই বিরোধের সময় মাস্ক এক্স-এ একটি মতামত জরিপ চালান, যেখানে তিনি অনুসারীদের জিজ্ঞেস করেন, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল প্রয়োজন কি না। শনিবার সেই জরিপের প্রসঙ্গ টেনে মাস্ক লেখেন, ‘জরিপে অংশগ্রহণকারীদের দুই-তৃতীয়াংশ নতুন দল চেয়েছেন এবং সেটাই আপনারা পেতে চলেছেন!’

এক্সে তিনি আরও লিখেছেন, ‘দেশকে অপচয় ও দুর্নীতিতে দেউলিয়া করে ফেলার ক্ষেত্রে আমরা একদলীয় শাসনে বাস করি, কোনও প্রকৃত গণতন্ত্রে নয়। আজ আমেরিকা পার্টি গঠিত হলো আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে।’

শনিবার পর্যন্ত দলটির নিবন্ধনের কোনো কাগজপত্র যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইলেকটোরাল কমিশন প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত দুই প্রধান দলের বাইরে থেকে রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলার চেষ্টা আগে অনেকেই করেছেন। তবে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে বাস্তব হুমকি হয়ে ওঠা তাদের জন্য বরাবরই কঠিন হয়েছে।

গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লিবার্টারিয়ান পার্টি, গ্রিন পার্টি এবং পিপলস পার্টির প্রার্থীরা ট্রাম্প বা তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে ঠেকাতে ব্যর্থ হন।

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন মাস্ক গত বছর নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পের সঙ্গে নাচতেও দেখা গেছে তাকে। এমনকি তার চার বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ওভাল অফিসে সাক্ষাৎ করেন।

মাস্ক ছিলেন ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান আর্থিক পৃষ্ঠপোষকও। তিনি ট্রাম্পকে পুনর্নির্বাচনের জন্য ২৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিলেন। নির্বাচনের পর মাস্ককে ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগ’ নামে একটি নতুন দফতরের প্রধান করা হয়। দফতরটির কাজ ছিল ফেডারেল বাজেটে বড় ধরনের কাটছাঁটের পরিকল্পনা করা।

তবে মে মাসে মাস্ক প্রশাসন ত্যাগ করলে এবং ট্রাম্পের কর ও ব্যয় পরিকল্পনার প্রকাশ্য সমালোচনা করলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত এই বিল সম্প্রতি কংগ্রেসে খুব অল্প ব্যবধানে পাস হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাতে স্বাক্ষর করেছেন।

বিলটিতে বিপুল পরিমাণ ব্যয় বরাদ্দ এবং কর ছাড় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং আগামী এক দশকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতিতে অতিরিক্ত ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি যুক্ত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই বিলের কড়া সমালোচনা করেছেন মাস্ক। তিনি বলেছেন, ‘বিলটি যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে।’ টেসলার মালিক হিসেবে মাস্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিলটিতে পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ বা ইলেকট্রিক গাড়ির মতো পণ্যের জন্য কোনও প্রণোদনা রাখা হয়নি।

ট্রাম্প এ প্রসঙ্গে তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, ‘ইতিহাসে কোনও মানুষ এত বেশি ভর্তুকি পেয়েছেন বলে জানা যায় না, যতটা মাস্ক পেয়েছেন। ভর্তুকি ছাড়া ইলন সম্ভবত দোকান বন্ধ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতেন।’

তিনি আরও বলেন, সরকারি দক্ষতা বিভাগকে মাস্কের কোম্পানিগুলোর জন্য দেওয়া ভর্তুকি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হবে। ট্রাম্প মাস্কের অন্যান্য ব্যবসার দিকেও ইঙ্গিত করেন।

এর আগে মাস্ক বলেছিলেন, তিনি একটি রাজনৈতিক দল গঠন করবেন এবং ট্রাম্পের করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধি বিলের সমর্থন দেওয়া আইনপ্রণেতাদের পরবর্তী নির্বাচনে হারাতে অর্থ ব্যয় করবেন।

রিপাবলিকানদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচনে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.