দুর্যোগ কবলিত এলাকায় দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী ও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার লক্ষে দেশের ৬৪টি জেলায় ৬৬টি ত্রাণ গুদাম নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষে ১২৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চলতি অর্থবছর শুরু করে ২০২০ সালের মধ্যে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৮ হাজার ৪৮২ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ের ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের প্রকল্পগুলোর বিষয়ে অবহিত করেন।
তিনি জানান, ৬৪টি জেলায় ৬৬টি (ঢাকা ও পটুয়াখালী জেলা ২টি করে) ত্রাণ গুদাম নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি দুর্যোগ প্রবণ দেশ। প্রতিবছর বন্যা, ঝূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী-ভাঙন, অগ্নিকাণ্ড, বজ্রপাত, ভূমিকম্প ইত্যাদি দুর্যোগে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয় হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী দেশটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে বন্যা, নদী ভাঙন, জলাবদ্ধতা, উত্তর অঞ্চলে প্রচণ্ড শীত ও খরা এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে। এ সকল দুর্যোগে ত্রাণ সামগ্রী দ্রুত পৌঁছানোর লক্ষে জেলা পর্যায়ে সংরক্ষণের জন্য কোন ত্রাণ গুদাম নেই।
প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অস্থায়ীভাবে অপর্যাপ্ত পরিসরে এবং কোন কোন জেলায় পরিত্যক্ত ভবনে ত্রাণ সামগ্রী যেমন, ঢেউটিন, তাবু, কম্বল এবং অন্যান্য শীত বস্ত্র, শুকনা খাবার, রান্না করার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি সংরক্ষণ করা হয়। ফলে এসব ত্রাণ সামগ্রীর গুণাগুণ নষ্ট ও চুরি হয়ে যায়।
দুর্যোগের কারণে দুর্যোগ কবলিত এলাকায় দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর নিকট দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী ও মানবিক সহায়তা পৌঁছিয়ে দেয়া ও দুর্যোগের ঝুকিঁ হ্রাস করতে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
সভায় ১০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ৩২৭টি সরকারি ও ১৯ হাজার ৩৫৭টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ সকল বিদ্যালয়সমূহে প্রায় ৯১ লাখ ৬০ হাজার ৩৬৫ জন ছাত্র-ছাত্রী পাঠ গ্রহণ করছে।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনসহ অন্যান্য ভবন নির্মাণ এবং এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবাবপত্র সরবরাহ করা হবে। এসময় তিনি সাম্প্রতিক শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তির আন্দোলনের বিষয়ে বলেন, এমপিও ভুক্তির দাবিতে এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের দাবি পূরণ হতে আরও সময় লাগবে।
তিনি বলেন- এবতেদায়ী শিক্ষকরা আগে স্বীকৃতির বাইরে ছিল। বর্তমান সরকার এ সব প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এক সাথে সবকিছু পাওয়া যায় না। এ সব মাদ্রাসা এমপিওর আওতায় আনতে বেশ কিছু প্রক্রিয়ার অবলম্বন করতে হবে। আর তা করতে বেশ কিছু সময় লাগবে বলেও মনে করেন তিনি।’’
Other