শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) ঝালকাঠির নলছিটির বাসিন্দা মো: মোতালেব হোসেন নিখোঁজ হয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী হয়েও রাজধানীর বছিলা ব্রিজের কাছে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দশতলা আলিশান বাড়ি তৈরি করছেন মোতালেব।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে ওই বাড়ির পাঁচ তলায় নির্মাণ কাজ দেখছিলেন তিনি। ওই সময় তিন-চারজন ব্যক্তি বাড়ির নীচে দাঁডিয়ে মোতালেব সম্পর্কে জানতে চান। বাড়ি ভাড়া করার কথা বলে মোতালেবকে তারা বাড়ির নীচে নামিয়ে এনে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান।
এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। এ ব্যাপারে হাজারীবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে এই তথ্য জানা যায়।
তিনি প্রায় ১২ বছর যাবত রাজধানীর গ্রিন রোডের সরকারি কর্মচারীদের কলোনী বসবাস করছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে টাইপিস্ট (তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী) হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পান মোতালেব। কিন্তু নিজেকে কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পিএ (টেলিফোন রিসিভসহ টুকিটাকি কাজ করার জন্য) হন। মোতালেবের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার মোল্লার হাট ইউনিয়নে। হতদরিদ্র কৃষকের ছেলে মোতালেব শিক্ষামন্ত্রীর পিএ নিযুক্ত হওয়ার তিন বছরের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।
বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলে তিনি নিজেকে শিক্ষামন্ত্রী পিএস/এপিএস ইত্যাদি পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। জিপিএ ফাইভ বিক্রি, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বদলি, সরকারি হাইস্কুল শিক্ষকদের বদলি, টেন্ডার, বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের অনুমতিসহ বিভিন্ন কাজে মাসোহারা দিতে হয় মোতালেবকে। ক্যামব্রিয়ানসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা মাফিয়া চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাতারাতি কোটিপতি বনে যান মোতালেব।
এই চক্রের সঙ্গে নামধারী কয়েকজন সাংবাদিকও রয়েছে। তারা সম্প্রতি শিক্ষা মাফিয়াদের টাকায় শ্রীলঙ্কা ও ভারত সফর করে এসেছে। এই নামধারী সাংবাদিক চক্রের সবাই পারিবারিকভাবে জামাত-শিবিরপন্থী। শনিবার মোতালেব নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তাকে খুঁজতে ব্যাপক ব্যতিব্যস্ত হন পারিবারিকভাবে শিবিরপন্থী এক সাংবাদিক।
ওই সাংবাদিকের ভাই মিরপুর এলাকার যুবদলের সভাপতি ও সিটি কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। তিনবছর আগে নিখোঁজ হন। অদ্যাবধি তার সন্ধান মেলেনি।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পাচ্ছিলেন মোতালেব।
আর্থিক দুর্নীতির দায় বরখাস্ত শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের কাগজপত্র মন্ত্রণালয় থেকে গায়েব হয়ে যাওয়ার পোছনেও মোতালেবের হাত রয়েছে বলে জানা যায়।’’
শিরোনামOther