২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

একমাত্র কার্বন নেতিবাচক দেশ : ভুটান

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৫০ অপরাহ্ণ, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮

চীন ও ভারতের মধ্যবর্তী প্রায় ১৪ হাজার ৮০০ বর্গমাইল নিয়ে অপরূপ হিমালয়ের পূর্বাংশে চির সবুজের দেশ ভুটান।

সমতল ভূমি থেকে বেশ উঁচুতে এই ভুটান, প্রাচ্যের নিউজিল্যান্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

এত নৈসর্গিক, এত শান্তিপ্রিয় মানুষের কথা ভেবে পৃথিবীর অধিকাংশ পর্যটক ঘুরতে আসেন ভুটানে।

কিন্তু আমরা কি জানি, পৃথিবীর মধ্যে একটি দেশ রয়েছে, যেটি কার্বন নিরপেক্ষ নয়, বরং পরিপূর্ণ কার্বন নেতিবাচকও? এটি হল ভুটান।

বেশিরভাগ দেশ যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস শোষণ করতে সক্ষম তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গ্যাস নির্গমন করলেও এখন পর্যন্ত বহু সম্মেলন করেও নিরপেক্ষের কাছাকাছি পর্যন্ত আসতে পারেনি।

কিন্তু এক্ষেত্রে প্রথম ব্যতিক্রম দেশ ভুটান। দেশটির মোট ভূমির ৭০ শতাংশ বনাঞ্চল। প্রাকৃতিক অক্সিজেন সিলিন্ডারসমেত উঁচু উঁচু পর্বতমালা সারিবদ্ধভাবে নৈসর্গিক সৌন্দর্য বহন করে দেশটি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

এদেশের মানুষের প্রধান কাজ বনায়ন বা কৃষিকাজ। বন রক্ষার পাশাপাশি ভুটানবাসী কয়েক বছর আগে ঘণ্টায় ১৫ হাজার গাছ রোপণ করে বিশ্ব রেকর্ডও গড়েছে।

প্রায় ৮ লাখ মানুষ নিয়ে এই দেশটি। টেলিভিশন চালু হয় ১৯৯৯ সালে। এখানে অধিক মাত্রায় জ্বালানি বা শক্তির প্রয়োগ না থাকায় যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হয় তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কার্বন শোষণক্ষম হওয়াতেই এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত।

গ্রিন হাউস গ্যাসের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা দ্রুতগতিতে বাড়ছে এবং এর বায়ুমণ্ডলে অকল্পনীয় পরিবর্তন হচ্ছে বেশামালভাবে।

মানুষের কারণে নির্গত গ্রিন হাউস গ্যাসগুলোর মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইড অন্যতম। ভুটান বার্ষিক ১৫ লাখ টন কার্বন নির্গমন করে। যেখানে দেশটির কার্বন শোষণ ক্ষমতা ৬০ লাখ টন।

বৌদ্ধমূর্তি পর্বত চূড়ায় উঠলেই পুরো থিম্পু শহরটি দু’চোখের সীমায় আটকে রাখা যায়। একটি দারুণ ব্যাপার হল, এ শহরে কোনো ট্র্যাফিক বাতি নেই।

ছোট-বড় গাড়িগুলো সব নিয়ম মেনে স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকে। দেশের মানুষজন নিজ নিজ দায়িত্বে কাজে মগ্ন থাকে। কোনো অনিয়ম, কোনো ত্রাস, কোনো ভেজালযুক্ত পরিবেশন খুঁজে পাওয়া যায় না। রাজাকেন্দ্রিক দেশ হলেও এখানে গণতন্ত্র বিরাজমান। গত অক্টোবরে দেশটিতে নির্বাচন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে নির্বাচনে জয়লাভের পর ভুটানবাসীর স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি কলেজে পর্যন্ত বিনামূল্যে পড়ার আস্থা দেন।

১৯৭৪ সালে ভুটান সরকার পর্যটন দেশ ঘোষণা করে। তবে দেশটির সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় ভারত, মালদ্বীপসহ বাংলাদেশের কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না ।

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যখন বিভিন্ন সচেতনতামূলক সম্মেলন নিয়ে ব্যস্ত, ভুটান সেখানে কার্বন নেতিবাচক দেশ হিসেবে ইতিমধ্যে স্থান করে নিয়েছে। মূলত, দেশটির বেশকিছু নীতি তাদের আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন