৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

নাজিরপুরে জমে উঠেছে ভাসমান তরমুজ বিক্রির হাট

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৪৮ অপরাহ্ণ, ০৯ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা বাজার সংলগ্ন বেলুয়া নদীতে জমে উঠেছে ভাসমান তরমুজ বিক্রির হাট। এ ভাসমান তরমুজের হাট সপ্তাহের দু’দিন (শনি ও মঙ্গলবার) বসছে। উপজেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে বেলুয়া নদী। বৈঠাকাটা বাজার ও বেলুয়া মুগারঝোর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এই নদী।

জানা গেছে, এই নদীতে প্রায় ৬৬ বছর ধরে ভাসমান তরমুজের হাট বসছে। মার্চ থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্য়ন্ত চলে বেচাকেনা। প্রতি হাটে কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় বিক্রি। ঢাকা, খুলনা, যশোর, নরসিংদী, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এই হাটে তরমুজ কিনতে আসেন। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে তরমুজ বিক্রি করে ভালো দাম পান।

সরেজমিন দেখা গেছে, বেলুয়া নদীতে ভাসমান বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০-৫০টি ট্রলার বোঝাই করে হাটে তরমুজ নিয়ে এসেছে ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা ট্রলারে উঠে দরদাম করছেন। ক্রেতা-বিক্রেতার হাকডাকে সরব তরমুজের হাট। দামে হলে এক ট্রলার থেকে তরমুজ কিনে আরেক ট্রলারে তোলা হচ্ছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ট্রলার থেকে তরমুজ কিনে ছোট নৌকায় তুলছেন। অনেক ব্যবসায়ী ট্রলার থেকে তরমুজ কিনে পাশের বৈঠাকাটা বাজারে রাখা ট্রাকে বোঝাই করছেন।

ক্ষেত কিনে পাইকারি দরে ভাসমান বাজারে তরমুজ বিক্রি করতে আসা রবিউল তালুকদার বলেন, ‘উপকূলীয় জেলাগুলোর চরাঞ্চলে প্রচুর তরমুজ আবাদ হচ্ছে। আমরা খেত হিসেবে তরমুজ কিনি। প্রতি বিঘা খেতের দাম পড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা। এরপর খেত থেকে তরমুজ কেটে আকারভেদে পাইকারি বাজারে বিক্রি করি। পাইকারি বাজারে শত (১০০টি) হিসেবে তরমুজ বিক্রি হয়।’

বৈঠাকাটা বাজারের পাইকাররি ব্যবসায়ী মো: আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ‘ভোলার চরফ্যাশন, পটুয়াখালী, বরগুনার বিভিন্ন চরে আবাদ করা তরমুজের ক্ষেত কেনেন ব্যবসায়ীরা। এরপর ক্ষেত থেকে পাকা তরমুজ ট্রলারে করে বৈঠাকাটাসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে বিক্রি করা হয়। বড় আকারের ১০০টি তরমুজের পাইকারি মূল্য ২২ হাজার থেকে ২৫ হাজার। মাঝারি আকারের তরমুজ ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। ছোট তরমুজ আকার ভেদে ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। হাট থেকে তরমুজ স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বড় ব্যবসায়ীরা কিনে নেন।’

এই হাট থেকে নিয়মিত তরমুজ কিনে নিয়ে যান উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মো: আজিজুল শেখ । তিনি জানান, ‘প্রতি হাটে দেড় থেকে ২ কোটি টাকার তরমুজ কেনাবেচা হয় এখানে।’ বৈঠাকাটা বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক মাসুদ রানা তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজারটি ১০০ বছরের পুরানো। এ বাজারে বিভিন্ন জেলা থেকে কাচাঁমাল ট্রালারযোগে আসে ট্রলারেই হাট বসে। প্রতি বছরের মতো এবারো তরমুজের বাজার জমজমাট।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসনত ডালিম সাংবাদিকদের জানান, ‘ভাসমান সবজি চাষে বিখ্যাতের পাশাপাশি ভাসমান বাজারও এখানে অনেক সুনাম অর্জন করেছে। নৌপথে পণ্য পরিবহন সহজ হওয়ায় এবং খরচের পরিমান কমে যাওয়ায় ঐতিহ্যবাহী এই ভাসমান বাজারটি ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে পছেন্দের।’

75 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন