২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পাথরঘাটায় সম্ভাবনা থাকলেও কমে যাচ্ছে শুঁটকি উৎপাদন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:০৪ অপরাহ্ণ, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

সাইদুল ইসলাম, রিমন:: উপকূলীয় এলাকা বরগুনার পাথরঘাটায় ব্যাপক কর্মসংস্থান আর রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও দিন-দিন কমে যাচ্ছে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ। স্থায়ী শুঁটকি পল্লী, পুঁজি সংকট ও শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় শুঁটকি তৈরিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।

পাথরঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ পল্লী। এখানে কাঁচা মাছ কীটনাশক ছাড়াই রোদে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে তৈরি করা হয় শুঁটকি। চলতি মৌসুমে পল্লীগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা এসব পল্লীতে প্রতিবছর বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় একশ মেট্রিক টন মাছের শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। বর্ষা মৌসুমে মাছ শুকানো যায় না বলে প্রকৃতি নির্ভর এ ব্যবসা। এ ছাড়া শুঁটকির সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের রয়েছে পুঁজি সংকট। পুঁজি বলতে তাদের রয়েছে এনজিওর লোন। এনজিওর লোন ও মহাজনদের উচ্চ সুদ দিয়ে ব্যবসা চালানো তাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারপরও সংশ্লিষ্টরা চালিয়ে যেতে চান এ ব্যবসা। দীর্ঘ দিনেও স্থায়ী শুঁটকি পল্লী গড়ে না ওঠায় হতাশ তারা।

শ্রমিকদের মজুরি কম দেয়ার অভিযোগও রয়েছে, ফলে দিন-দিন কমছে শুঁটকি তৈরি। তবে উপকূলে স্থায়ী শুঁটকিপল্লী নির্মাণ, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা এবং পুঁজি সংকটের স্থায়ী সমাধানে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে সরকারের রাজস্ব যেমনি বাড়বে তেমনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শুঁটকির সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার পরিবারের স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে। এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

পল্লীর কয়েক জন বিক্রেতা জানান, এখন ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বর্ষা মৌসুমে ব্যবসা তেমন ভালো চলে না। সরকার যদি স্থায়ী শুঁটকিপল্লী নির্মাণ করে তাহলে সারা বছর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো। সরকারিভাবে কোন সহজ শর্তে ঋণ না পাওয়ায় প্রতি বছরই দেনা গ্রস্ত হয়ে পড়তে হচ্ছে। শুঁটকি পল্লীর সাথে জড়িত মৎস্যজীবীরা সাহায্যের পরিবর্তে সহজ শর্তে ঋণ আশা করছে সরকারের কাছে। আর সরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে আশা তাদের।

সাগর উপকূলের বিভিন্ন চরাঞ্চলের এসব শুঁটকি শিল্পকে কেন্দ্র করে যেমন টিকে থাকে দেশের সকল ফিড মিলগুলো। তেমনি টিকে থাকে বাংলাদেশের ডেইরি, পোল্ট্রি ও মৎস্য সেক্টরও। তাই শুঁটকি শিল্প বিকাশে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ  গ্রহণ করবেন এমটাই প্রত্যাশা উপকূলীয় জেলেদের।

মহাল মালিক আল-আমিন বরিশালটাইমসকে জানান, আমরা এখন বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করছি। আগে শুঁটকিতে লবণ ও বিষ প্রয়োগ করা হতো। যার কারণে মানুষের স্বাস্থ্যর জন্য খুবই ক্ষতিকর ছিল। সে কথা মাথায় নিয়ে আমরা বিষ ও লবণ মুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করছি এখন।

পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার বরিশালটাইমসকে জানান, সম্ভাবনাময় এ শুঁটকি শিল্পকে সঠিক ব্যবস্থাপনায় আনতে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। শুঁটকি উৎপাদনে কেউ যাতে কীটনাশক ব্যবহার করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আশা করি সবাই বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করবে।

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন