২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

দশমিনায় শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নয়ছয়, ঘুষ বাণিজ্যে মামলা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:০৮ অপরাহ্ণ, ০৮ আগস্ট ২০২০

বার্তা পরিবেশক দশমিনা:: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার সদরের ঐতিহ্যবাহি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেগম আরেফাতুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেশ ভালোই চলছিল বিদ্যালয়টির কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের ফলাফলের দিক থেকে উপজেলায় অনেকবার শীর্ষ অবস্থানে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ২০০৭ সালে প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম অবসরে গেলে নতুন প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়টি নিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল ও সংশ্লিষ্টরা মেতে ওঠেন নোংরা রাজনীতিতে। নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা মেতে উঠেন বিভিন্ন রকম নাটকীয়তায়। শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে করা হয় দুটি মামলা। ফলে শিক্ষার মানের অবস্থা বর্তমানে নাজুক। শিক্ষার্থীদের ফলাফলের দিক থেকে বিগত বছরের তুলনায় অনেক পিছিয়ে গেছে।

জানা গেছে, ওই শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রথম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ওই পদের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু অদৃশ্য কোন এক কারণে বিভিন্ন অজুহাতে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন না করে দ্বিতীয় দফায় আবার শুধু প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য পুন:নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

দ্বিতীয় দফার বিজ্ঞপ্তির পর গত বছরের ৮ আগস্ট নিয়োগের পরিক্ষার জন্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু নিয়োগ পরিক্ষার আগেই মো. জহিরুল আলম নামে এক প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থীর মামলার কারণে কার্যক্রম পন্ড হয়ে যায়।

তৃতীয় দফায় শুধু সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা। ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। পরে উপজেলার খারিজাবেতাগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানকে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। এ ঘটনায় বেগম আরেফাতুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গনিত শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থী মো. জসিম উদ্দিন ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে নিয়োগে অর্থ বাণিজ্য ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে নিয়োগ প্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানের নিয়োগ বাতিল চেয়ে চলতি মাসের ৩ তারিখ দশমিনা সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থী ও দশমিনা উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন বরিশালটাইমসকে জানান, তিনি ও মো. খলিলুর রহমান শনিবার পর্যন্ত নিয়োগ পরিক্ষার কোন প্রবেশপত্র (তৃতীয় দফার নিয়োগ পরীক্ষার) হাতে পাননি। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি ঘুষ বাণিজ্য, চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন করে নিয়োগ প্রদান করেছেন। ঘুষ বাণিজ্যে আমরা বাধা হতে পারি মনে করায় আমাদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেয়নি ম্যানেজিং কমিটি। শুধু তাই নয়। সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে আমিসহ আমাদের প্রতিষ্ঠানের আরও বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটি।

এ বিষয় নিয়োগ প্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিলুফার রাউফ বরিশালটাইমসকে জানান, ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয়। সঠিক নিয়ম মেনেই সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন