৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

যাদের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন ইসিতে

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ও বাতিল চেয়ে পাঁচদিনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল আবেদন করেছেন ৫৬১ প্রার্থী। এর মধ্যে সরকার দলীয় অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধেও আপিল করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, হয়েছে পাল্টা আপিলও।

গত ৫ ডিসেম্বর আপিল শুরু হয়, শেষ হয় ৯ ডিসেম্বর। এই পাঁচদিনে ৫৬১টি আপিল আবেদন পড়েছে ইসিতে। প্রথম দিন ৪২টি, দ্বিতীয় দিন ১৪১, তৃতীয় দিন ১৫৫, চতুর্থ দিন ৯৩টি ও শেষ দিনে ১৩০টি আপিল আবেদন পড়েছে।

ইসি সচিব জাহাংগীর আলম জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে গত পাঁচদিনে আপিল আবেদন পড়েছে ৫৬১টি। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি করে কমিশন সিদ্ধান্ত দেবে। কোন দলের কতটি আবেদন পড়েছে তা পরে জানা যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ ফারুকের মনোনয়নপত্রের সমর্থনকারী কে বি এস আহমেদ।

হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান ওমরের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির।

এছাড়া হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলে বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদ।

নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্টধারী অভিযোগ করে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। তার পক্ষে তার আইনজীবী মো. গোলাম কিবরিয়া আপিল আবেদন জমা দেন। আবেদনের সঙ্গে শামীম হকের নেদারল্যান্ডের পাসপোর্টের ফটোকপি যুক্ত করে বলা হয়, সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী বিদেশি নাগরিক হওয়ায় তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না।

অন্যদিকে ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের প্রার্থিতা বাতিল পাল্টা আপিল করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক।

আয়কর সংক্রান্ত নথিতে অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে পটুয়াখালী-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রুহুল আমিন হাওলাদারের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেছেন মো. নজরুল ইসলাম।

দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ এনে সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।

ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতির প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজের প্রার্থিতা ফেরত পেতে ইসিতে আপিল করেছে তিনি। নিজের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের পাশাপাশি তিনি একই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ এনে প্রার্থীতা বাতিলের আবেদন করেছেন।

এছাড়াও ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম, টাঙ্গাইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছোট মনির, নেত্রকোনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাজ্জাদুল হাসান, নোয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের একরামুল করিম চৌধুরী ও কুমিল্লা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করা হয়েছে।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল দুই হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছেন ৭৩১টি, যা মোট দাখিল করা মনোনয়নপত্রের ২৬ দশমিক ৯২ শতাংশ। বৈধ হয়েছে এক হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র, যা দাখিল করা মনোনয়নপত্রের ৭৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।

10 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন