২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটায় বিপর্যস্থ কুয়াকাটার সৈকত

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:১৭ অপরাহ্ণ, ১৯ জুলাই ২০২০

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া:: বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের ঝাপটায় পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকত ক্রমশই বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। আমাবস্যা,পূঁর্ণিমা কিংবা সাগরের সৃষ্ট ঢেউয়ের তোরে সৈকতের বিভিন্ন স্থান থেকে বালু সরে যাচ্ছে। এর ফলে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্পট। গত ৫ বছরের ব্যবধানে সৈকত দুই কিলোমিটার সাগরের ভিতরে চলে গেছে।

সীমানা প্রাচীরসহ বায়োগ্যাস প্লান্টের সবকারি ভবনটি এখন অদৃশ্য। বিলীন হয়ে গেছে সৈকত লাগোয়া নারিকেল বাগান,তালবাগান,শাল বাগান। হুমকির মুখে রয়েছে জাতীয় উদ্যানের ঝাউবন। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে গঙ্গামতি সৈকতের ঝাউবন ও লেম্বুরবনসহ বেশকিছু পর্যটন স্পটের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো গাছ পালা নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় এ সৈকতটি খুব দ্রুত বিলিন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পর্যটকসহ স্থানীয়রা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পূঁর্ণিমা-আমাবস্যা জোঁ’তে সাগর ভয়ানকভাবে ফুঁসে ওঠেছে। এক একটা বিশাল ঢেউ সৈকতে আছড়ে পড়ছে। আর ঢেউয়ের সাথে সাথে সৈকত থেকে বালু সরে যাচ্ছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে তাল গাছ, রেইনট্রি গাছ ও নারিকেল গাছসহ নানা প্রজাতির উদ্ভিদ কাত হয়ে পড়ে রয়েছে সৈকতে। গত দুই মাসে প্রায় ৪০ ফুট সৈকত বিলীন হয়ে গেছে সাগর গর্ভে। এভাবে বালু ক্ষয় অব্যাহত থাকলে কুয়াকাটা বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে আবাসিক এলাকা ও ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়বে এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দা ফেরেস্তালী খলিফা বরিশালটাইমসকে জানান, সেই ৩৫ থেকে ৪০ বছর আগে সাগর পার থেকে ৪-৫ মাইল দুরে গিয়ে শুটকির ব্যাবসা করতাম। এখন বেরি বাঁধের সাথে সাগরের ঢেউ আছরে পড়ছে। তবে কুয়াকাটাকে রক্ষা জন্য স্থায়ী প্রোটেকশন দরকার বলে তিনি জানান।

সৈকতে ছোট্ট চায়ের দোকানি রেজাউল করিম বলেন, এই চায়ের দোহান দিয়া আমার সংসার চলে। রাইতে দোহান বন্ধ করে বাড়ি যাই। কোন সময় যে সাগরের পানিতে ভাইসা লাইয়া যায়। এ্যাহন এই চিন্তায় আছি।

কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক মহিউদ্দিন বলেন, এখনই কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙ্গন রোধ করা প্রয়োজন। তা না হলে পর্যটকদের আগমন কমে যাবে। আর বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ব্যবসায়ি হোসাইন আমির বরিশালটাইমসকে জানান, কুয়াকাটা সৈকত ভাঙ্গন দীর্ঘ দিনের সমস্যা। ইতিমধ্যে নারিকেল বাগান, ঝাউবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন ফেরানোর জন্য এই তো কদিন আগে সৈকতে বালুর বস্তা ফালানো হয়েছে। তাতে কোনো লাভ হয়নি। বরং সেগুলো সাগরের পানিতে ভেসে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বরিশালটাইমসকে জানান, কুয়াকাটা সৈকত রক্ষার জন্য স্থায়ী ভাবে (টিপিপি) প্লান্ট তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন